ফের নৃশংস ঘটনার সাক্ষী রইল বিজেপিশাসিত উত্তরপ্রদেশ। গেরুয়া-পার্টি ক্ষমতায় আসার পর থেকেই এই রাজ্যে বারবার বিপন্ন হয়েছে নারীসুরক্ষা। হাথরসের ভয়াবহ স্মৃতি এখনও দগদগে দেশবাসীর মনে। এবার যোগীরাজ্যের জনৈক মহিলাকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠল তাঁর স্বামী ও সৎপুত্রের বিরুদ্ধে! বিচ্ছেদের পর এক ব্যক্তিকে বিয়ে করেছিলেন সেই মহিলা। অভিযোগ, তার কিছু দিনের মধ্যেই তাঁকে দিনের পর দিন ধর্ষণ করেন দ্বিতীয় স্বামীর পুত্র। ধর্ষণের অভিযোগ করেছেন স্বামী ও তাঁর বন্ধুদের বিরুদ্ধেও। এফআইআর দায়ের সত্ত্বেও এখনও অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হয়নি বলে দাবি। ন্যায়বিচারের আশা হারিয়ে নিষ্কৃতিমৃত্যুর আবেদন জানিয়ে দেশের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে চিঠি লিখলেন উত্তরপ্রদেশের লখনউয়ের ৩০ বর্ষীয়া সেই মহিলা। উনি জানিয়েছেন, প্রথম স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদের তিন বছর পর গত এপ্রিল মাসে চণ্ডীগড়ের ৫৫ বছর বয়সী এক কৃষককে বিয়ে করেন তিনি। তার পর পরই জোর করে তাঁর সঙ্গে অবৈধ সম্পর্কে জড়ান সৎপুত্র। জানাজানি হলে ফল ভাল হবে না, এই কথা বলে দ্বিতীয় স্বামীর পুত্র তাঁকে হুমকি দিতেন বলে অভিযোগ করেছেন মহিলা। তাই মুখ বুজে সবটা মেনে নিয়েছিলেন তিনি।
পাশাপাশি সেই মহিলার আরও অভিযোগ, তিনি অন্তঃসত্ত্বাও হয়েছিলেন। ডিএনএ পরীক্ষা করাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু পুরাণপুরে একটি বেসরকারি হাসপাতালে তাঁকে জোর করে গর্ভপাত করানো হয়। গত ১৮ই জুলাই তাঁকে চণ্ডীগড়ে স্বামীর ফার্মহাউসে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে স্বামীর বন্ধু, আত্মীয় ও তাঁর দুই সহকর্মী মহিলাকে ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ। এর পরই পুরানপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন মহিলা। তাঁর দাবি, অভিযোগের পরও কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। এর পরই আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন মহিলা। এই ঘটনায় এফআইআর দায়েরের নির্দেশ দেয় আদালত। গত ৯ই অক্টোবর পুরানপুর কোতয়ালি থানায় এফআইআর দায়ের করেন তিনি। পিলভিটের পুলিশ সুপার দীনেশকুমার প্রভু জানিয়েছেন, এফআইআরে স্বামী, সৎপুত্র-সহ পাঁচ জনের নাম রয়েছে। মামলাটি জটিল হওয়ায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতে দেরি হচ্ছে। তবে তদন্ত চালানো হচ্ছে।হবর্তমানে মা, দুই ভাই ও প্রথম পক্ষের ছ’বছরের ছেলের সঙ্গে থাকেন ওই মহিলা। “বিচারব্যবস্থার উপর আশা হারিয়ে ফেলেছি। আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও এফআইআরে নাম থাকা কোনও অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেনি পুলিশ। মুখ বন্ধ রাখতে আমায় চাপ দেওয়া হচ্ছে। হুমকি দেওয়া হচ্ছে”, নিষ্কৃতিমৃত্যুর আবেদন প্রসঙ্গে জানিয়েছেন তিনি। ঘটনাটি নিয়ে ইতিমধ্যেই তোলপাড় রাজনৈতিক মহল থেকে জনসাধারণ। নিন্দায় সরব বিরোধীরা। প্রশ্নের মুখে পড়েছে যোগী-প্রশাসন।