বিজয়া সম্মিলনীর মাধ্যমে পঞ্চায়েতের আগে পুরোপুরি জনসংযোগ সেরে ফেলল তৃণমূল কংগ্রেস। গত ১২ দিন ধরে তাদের টার্গেট ছিল রাজ্যের বেশি সংখ্যক মানুষের কাছে পৌঁছে যাওয়া। লক্ষ্য ছিল ৫০০ বিজয়া সম্মিলনী করা। তৃণমূল কংগ্রেস সূত্রে খবর, ৫০০ বদলে ১০০০ বেশি সভা করেছে শাসক দল। আর এই সভা থেকে, কোন এলাকায়, কী কী সমস্যা রয়েছে তার আঁচ পেল তৃণমূল। বহু জায়গাতেই পুরানো কর্মীদের ময়দানে নামাতে পেরেছে শাসক দল।নতুন-পুরানো দ্বন্দ্ব মেটাতে একই মঞ্চে হাজির করা হয়েছে নেতাদের।
বিজয়া সম্মিলনীর মাধ্যমে বুঝে নেওয়া হয়েছে তৃণমূলের মহিলা কর্মী সমর্থকরা রাস্তায় নামছেন কি না? বিজয়া সম্মিলনী থেকে দলের নজরে যে যে রিপোর্ট এসেছে, তা এরকম –
স্থানীয় তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্বের ঐক্যবদ্ধ চেহারাটা চোখে পড়ছে সব সভায়। ২. সভাগুলিতে রাজ্য কমিটির একজন অন্তত নেতা উপস্থিত থাকছেন। ৩. ১৯৯৮ সাল অর্থাৎ নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তৃণমূল কংগ্রেস প্রতিষ্ঠার দিন থেকে যাঁরা দলের সঙ্গে ছিলেন সেই পুরনো নেতা-কর্মীদের সংবর্ধনা দেওয়া হচ্ছে। ৪. জেলায় দলের সর্বস্তরের সাংগঠনিক নেতৃত্ব থাকছেন মঞ্চে। সবমিলিয়ে দলের নতুনরা তো আছেনই, সঙ্গে পুরনো সিনিয়র নেতা-নেত্রীরাও বিজয়া সম্মিলনীর সভায়-মঞ্চে যথাযথ মর্যাদায় উপস্থিত থাকায় ও মাঠে নামায় সভাগুলির গুরুত্ব যেমন বাড়ছে, তেমনই ধারে ও ভারে বিরোধীদের বুঝিয়ে দেওয়া যাচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেসই বাংলার মানুষের কাছে একমাত্র বিকল্প। অন্য কোনও দল নয়। সভাগুলি পরিণত হচ্ছে সমাবেশে। ৫) বহু জায়গায় কাদের দ্বন্দ্ব তাও জানা যাচ্ছে। জেলায় বিজয়া সম্মিলনীর সভাগুলিতে মঞ্চের ব্যাকড্রপে ব্যবহার হয়েছে দুটি ছবি। একদিকে নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অন্যদিকে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
অথচ দু’জনের কেউই উপস্থিত নেই সব সভায়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের কাজ সামলাচ্ছেন। ভবানীপুর বিধানসভায়, দলের বিজয়া সম্মিলনীতে তিনি ছিলেন। ওই কেন্দ্রের বিধায়কও তিনি। আর অভিষেক বন্দোপাধ্যায় চোখের চিকিৎসার জন্য বিদেশে আছেন৷ কিন্তু তাঁদের ছবিকে সামনে রেখেই কর্মীদের ভিড় হচ্ছে।
ফলে সশরীরে দুই হেভিওয়েট উপস্থিত না থাকলেও, তাঁদের ছবিকে ঘিরেই উৎসাহ-উদ্দীপনা কর্মীদের মধ্যে আনা হচ্ছে। দলের শীর্ষ নেতৃত্ব প্রথমে ৫০০ সভার টার্গেট রাখলেও দেখা যাচ্ছে সভার সংখ্যা ১০০০ ছাড়িয়ে গেছে। এভাবে এই পর্যায়ে একলপ্তে ৩০ লাখ সাংগঠনিক কর্মীকে মাঠে নামানোর সঙ্গে সঙ্গেই প্রায় ৮০ লক্ষ মানুষের কাছে প্রত্যক্ষভাবে পৌঁছে যাচ্ছে দল, এমনটাই মত দলের অন্দরে।