এক দিকে যেমন কলকাতা-সহ সারা রাজ্য জুড়ে বিরাট ধুমধাম করে পালন করা হচ্ছে দুর্গাপুজো। অন্যদিকে দানা বেধেছে এক বিতর্ক। এর কেন্দ্রে রয়েছে দক্ষিণ কলকাতার এক পুজো। সেখানে মহাত্মা গান্ধীকে মহিষাসুর রূপে দেখানো হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
দক্ষিণ কলকাতার রুবি পার্ক এলাকায় এই পুজোটির আয়োজন অখিল ভারত হিন্দু মহাসভা। তাদের মণ্ডপে দেবী দুর্গার যে মূর্তিটির পুজো করা হচ্ছে, সেখানেই মহিষাসুর রূপে রাখা হয়েছে মহাত্মা গান্ধীকে। দেবী দুর্গার হাতে তাঁকে বধ হতে দেখা গিয়েছে। এ নিয়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছে গোটা রাজ্যে। উত্তপ্ত হচ্ছে বাংলার রাজনীতিও। যদিও ইতিমধ্যেই পুলিশ এসে অসুর বদলে গিয়েছে।
চাপের মুখে হিন্দু মহাসভার এই পুজোর বিতর্ক নিয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেছেন, ‘এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করছি। গান্ধীজি আমাদের রাষ্ট্রের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সন্তানদের মধ্যে এক জন। তাঁকে এ ভাবে অসুররূপে দেখানো হয়েছে, এটি অত্যন্ত নিন্দনীয়। এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত পুলিশের।’ বিজেপি রাজ্যকে ভাগ করার চেষ্টা করছে, রাজ্যের অনুদান দিচ্ছে না এবং গান্ধীকে বড় করে দেখানোর চেষ্টা করছেন নরেন্দ্র মোদী, গান্ধীমুক্ত ভারত চাই— বিজেপির বিরুদ্ধে হিন্দু মহাসভার এই স্লোগান নিয়ে সুকান্ত বলেন, ‘এই সব পাগলদের কাজ। এদের গুরুত্ব দেওয়ার প্রয়োজন নেই। পুলিশ গ্রেফতার করে কিছু জেলে রেখে দিলেই সব ঠিক হয়ে যাবে।’
যদিও তৃণমূল বলছে, হিন্দু মহাসভা বিজেপিই মুখ! এখন শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা করছে বিজেপি। অসুরের জায়গায় মহাত্মা গান্ধীকে বসানোটা কোনও ভাবেই ঠিক হয়নি। এ প্রসঙ্গে দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘এটা ঘোরতর অন্যায়। এটা পাপ কাজ হয়েছে। কোনও রকম সুস্থ রুচির সঙ্গে গোটা বিষয়টি যায় না। রাতে শুনেছি ওরা নাকি অসুর বদল করেছে। যদি করে থাকে খুবই ভাল, না হলে কড়া পদক্ষেপের মুখে পড়বে।’ তাঁর দাবি, ‘ওরা তো বিজেপিরই অন্তরাত্মা। বিজেপি তো গডসের পূজারি।’ সুকান্তের মন্তব্য প্রসঙ্গে কুণাল বলেন, ‘বিজেপি আবার কী গ্রেফতারি দাবি করবে? ওরা তো গডসের পুজো করে। বিজেপির তো এটাই মুখ। আর গ্রেফতারির দাবিটা হল মুখোশ। ওরা হচ্ছে আদি বিজেপি। শুভেন্দুরা দলবদলু বিজেপি বলে ওদের সহ্য করতে পারছে না।’