দেশবাসীর করের ১৬০০ কোটি টাকা খরচ করে এনআরসির তালিকা তৈরি করেছিল কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। তিন বছর ধরে প্রায় ৭০ কোটি টাকা খরচ করে এত জনকে বসিয়ে বেতনও দেওয়া হয়েছিল। এখন আবার সেই বিজেপিই এনআরসি বাতিল করতে উঠেপড়ে লেগেছে। কোটি কোটি টাকা খরচ করে তিন বছর ধরে ২১০ জন ফরেনার্স ট্রাইবুনাল সদস্যকে বসিয়ে রাখা হয়েছে। তাই তাঁদের কার্যকালের মেয়াদ আর বাড়ানো অর্থহীন বলে কেন্দ্রকে জানিয়েছে আসাম সরকার। গুয়াহাটি হাই কোর্টে হলফনামা জমা দিয়েছে তারা।
প্রসঙ্গত, এনআরসির তালিকাছুট ১৯,০৬,৬৫৭ জন আবেদনকারীর নাম বাদ পড়ার কারণ জানিয়ে পাঠানো রিজেকশন লেটার দেওয়ার কাজ এখনও শুরুই হয়নি। তার মধ্যেই বর্তমান এনআরসির প্রাসঙ্গিকতা নিয়েই উঠেছে প্রশ্ন। চলছে মামলা। ফের ১০০ শতাংশ রি-ভেরিফিকেশন দাবি করা হয়েছে। তাই নাম বাদ পড়াদের বিচার কবে শুরু হবে কোনও ঠিক নেই। রাজ্যে আগে থেকে ১০০ ফরেনার্স ট্রাইবুনাল ছিল। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মতে তালিকাছুটদের বিচার প্রক্রিয়া দ্রুত সারতে আরও ৪০০ ফরেনার্স ট্রাইবুনাল গড়ার ব্যাপারে রাজ্যের তরফে ৫৬৫ কোটি ৬০ লক্ষ টাকা চাওয়া হয়েছিল। পরে সংখ্যাটি কমিয়ে ২০০ করা হয়। সাক্ষাৎকার পর্বের পরে নিযুক্ত হন ২১০ জন। তাঁদের মাসিক বেতন ছিল অন্য সুবিধে বাদে ৯০ হাজার টাকা। কিন্তু এ বছর থেকে তাঁদের বেতন অনিয়মিত হয়ে পড়ে। কয়েক মাসের বেতন দেওয়াও হয়নি।
অতিরিক্ত দুই শতাধিক ট্রাইবুনাল সদস্যের নিয়মিত ভাতা না দেওয়া নিয়ে হওয়া মামলার জেরে রাজ্য সরকার হাই কোর্টকে জানায়, এত জন সদস্যকে বসিয়ে বেতন দেওয়ার মানে হয় না। ২২ সেপ্টেম্বর তাঁদের কার্যকালের বর্ধিত মেয়াদও শেষ হয়েছে। তাই কার্যকাল আর না বাড়াতে বলে কেন্দ্রকে চিঠি পাঠানো হয়েছে। যদিও গোটা বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টের বিচারাধীন। আদালত বলেছিল, যত দিন রিজেকশন লেটার না দেওয়া হচ্ছে তাদের বকেয়া অন্য মামলাগুলির নিষ্পত্তিতে কাজে লাগানো হোক। শুধু ২১০ জন ফরেনার্স ট্রাইবুনাল সদস্য নিয়োগই নয়, ট্রাইবুনালের কাজে সহায়ক হিসেবে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির ১৬০০ কর্মীকে বাছাই করে রাজ্য সরকার। কিন্তু অতিরিক্ত ট্রাইবুনালের গুরুত্ব না থাকায় ওই ১৬০০ জনের নিযুক্তিও বাতিল হতে চলেছে।