আর মাত্র একান্ন দিনের অপেক্ষা। তারপরই ফুটবলের বিশ্বযুদ্ধের উত্তেজনায় মেতে উঠবেন ক্রীড়াপ্রেমীরা। নভেম্বরে কাতারে বসতে চলেছে ফুটবল বিশ্বকাপের আসর। জোরকদমে চলছে প্রস্তুতি। এবারের ফুটবল বিশ্বকাপ আয়োজনে রেকর্ড খরচ করেছে কাতার। ১৯৯৪ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত সাতটি ফুটবল বিশ্বকাপে সব মিলিয়ে যা খরচ হয়েছে, তার চার গুণেরও বেশি টাকা খরচ হচ্ছে শুধু একটি বিশ্বকাপের আয়োজনেই! ব্যয় হচ্ছে ১৭,৬৮,১৮৯ কোটি ৬৭ লক্ষ টাকা। এর আগে রাশিয়ায় ফুটবল বিশ্বকাপ আয়োজনে খরচ হয়েছিল ১,০২,৬২৬ কোটি ৯৫ লক্ষ টাকা। অর্থাৎ, রাশিয়ার থেকে ১৭ গুণ বেশি খরচ করছে কাতার। এর আগে কোনও ফুটবল বিশ্বকাপ আয়োজনে সব থেকে বেশি খরচ করেছিল ব্রাজিল। ২০১৪ সালে ১,৩২,৭০৭ কোটি ২৭ লক্ষ টাকা খরচ করেছিল তারা।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ১৯৯৪ সাল থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত প্রতিটি ফুটবল বিশ্বকাপ আয়োজন করতে এক লক্ষ কোটি টাকার কম খরচ হয়েছে। ১৯৯৪ সালে আমেরিকায় ফুটবল বিশ্বকাপ আয়োজনে খরচ হয়েছিল ১০,২১০ কোটি ৪৫ লক্ষ টাকা। ১৯৯৮ সালে ফরাসি দেশে এই প্রতিযোগিতা আয়োজনে খরচ হয়েছিল ২০,৩৬৬ কোটি ৪৬ লক্ষ টাকা। ২০০২ সালে কোরিয়া-জাপান, এই দু’টি দেশ বিশ্বকাপের আয়োজন করেছিল। খরচ হয়েছিল ৬১,৯৮৪ কোটি ৮৮ লক্ষ টাকা। ২০০৬ সালে জার্মানিতে বিশ্বকাপ আয়োজন করতে ৩৮,০৫৯ কোটি ৬৯ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছিল। ২০১০ সালে ফুটবল বিশ্বকাপ আয়োজন করতে ৩১,৮৬৩ কোটি ৯২ লক্ষ টাকা খরচ করেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা।
এবছর কাতারে বিশ্বকাপ আয়োজনে এরূপ পাহাড়প্রমাণ খরচের কারণ, সেখানে নতুন স্টেডিয়াম নির্মাণ। বিশ্বকাপের জন্য কাতারে আটটি নতুন স্টেডিয়াম তৈরি হয়েছে। ফুটবলারদের অনুশীলনের জন্যও মাঠের বন্দোবস্ত করতে হয়েছে। এই স্টেডিয়াম, মাঠ ও দর্শকদের সুযোগ-সুবিধার জন্য ৫৭,৫৫৯ কোটি ৩১ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে। এই ব্যই ছাপিয়ে গিয়েছে ১৯৯৪ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত প্রতিটি ফুটবল বিশ্বকাপ আয়োজনের খরচকে। কাতারে বিশ্বকাপ দেখতে প্রায় ১২ লক্ষ দর্শকের যাওয়ার কথা। সে দেশে হোটেলে ঘরের সংখ্যা ৩০ হাজার। তার মধ্যে প্রায় ৮০ শতাংশ ঘর বুক করে রেখেছে ফিফা। ফুটবলার ও তাদের পরিবার, বিনিয়োগকারী এবং বিশেষ অতিথিদের জন্য সেই সব ঘর বুক করা হয়েছে। তাই দর্শকদের জন্য নতুন অনেক হোটেল তৈরি করছে কাতার। বিশ্বকাপের আগেই সেই হোটেলের কাজ শেষ হয়ে যাবে। এই হোটেল তৈরিতেও অনেক খরচ হচ্ছে। পাশাপাশি, দর্শকদের স্টেডিয়ামে যাওয়ার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা করেছে কাতার। চার হাজার বাস রয়েছে। তাতে করে দর্শকরা স্টেডিয়ামে যাবেন। কাতারের বিভিন্ন জায়গা থেকে সেই সব বাস ছাড়বে। সেই বাসে করে নিখরচায় স্টেডিয়ামে যেতে পারবেন দর্শকরা। এই ব্যবস্থাও যথেষ্ট ব্যয়বহুল বলেই অনুমান করা হচ্ছে।