আর মাত্র কয়েকদিন। তারপরই দুর্গাপুজোর আনন্দে মেতে উঠবে আপামর বাঙালি। মানুষের ঢল নামবে মহানগরী কলকাতায়। যানজট রুখতে নযুন পদক্ষেপের পথে রাজ্য। পুজোর আগেই বাস-মিনিবাস চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হতে পারে টালা ব্রিজ। আগামী ২৯শে সেপ্টেম্বর থেকেই এই ব্রিজের উপর দিয়ে বাস চলার ছাড়পত্র মিলতে পারে। সূত্র অনুযায়ী খবর মিলেছে তেমনটাই। শনিবার থেকেই ছোট গাড়ি চলা শুরু হয়ে গেল টালা দিয়ে। কিন্তু এখনও বাস-ট্রাকের মতো ভারী যান চলাচলের ছাড়পত্র মেলেনি। তবে তা দ্রুত মেলার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। ফলে পুজোর মধ্যে উত্তর শহরতলির মানুষের অনেক সুবিধা হবে। এই ব্রিজ অনেক চওড়া হওয়ায় পুজোতে যানজটের আশঙ্কা খুব একটা থাকছে না। একইসঙ্গে কিছুদিনের মধ্যে শুরু হয়ে যেতে পারে ট্রাক চলাচল। শনিবার থেকে টালা সেতুতে যান চলাচল শুরু হয়েছে। আপাতত টালা সেতুতে ছোট যানবাহন চলাচল করবে। সংস্কারের পর বৃহস্পতিবার বিকেলে এই সেতুর উদ্বোধন করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু উদ্বোধন হলেও শুক্রবার সেখানে যান চলাচল বন্ধ ছিল। অবশেষে শনিবার থেকে যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে সেতু। প্রচুর মানুষ এদিন শুধু সেতু দেখতে আসেন। অনেকেই গাড়ি দাঁড় করিয়ে নেমে ব্রিজের সৌন্দর্য্য দেখেন। লম্বায় এই সেতু পৌনে এক কিলোমিটার। টালা সেতু পুজোর আগে উদ্বোধন করার পিছনে প্রশাসনের মূল উদ্দেশ্য ছিল ভিড় সামলানো।
প্রসঙ্গত, উত্তর কলকাতার কিছু অংশ ও উত্তর শহরতলির সঙ্গে কলকাতার যোগাযোগের অন্যতম মূল সূত্র ছিল এই সেতু। তা বন্ধ থাকায় যাত্রীদের চরম সমস্যায় পড়তে হয়েছিল। সেতু চালু হলেও যেহেতু এখন বাস চলাচল বন্ধ তাই খুব একটা সুরাহা সাধারণ মানুষের হয়নি। সেকথা ভেবেই তাই ২৯শে সেপ্টেম্বর থেকে বাস চলাচল শুরু হতে পারে। রাজ্যের পরিবহণ দফতর, পূর্ত দফতর, কলকাতা পুরসভা, এবং কলকাতা পুলিশ একত্রে নবনির্মিত সেতুর পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। উল্লেখ্য, টালা সেতুর উদ্বোধনের দিন দশেক আগে বাস মালিকদের সংগঠন পরিবহণ দফতরের কাছে উদ্বোধনের পরে এই সেতুতে বাস চালানোর অনুমতির জন্য আবেদন জানিয়েছিল। কিন্তু তখন রাজি হয়নি প্রশাসন। তাই প্রাথমিকভাবে আপাতত ছোট গাড়ি দিয়ে শুরু হল নবরূপে টালা সেতুর পথচলা। “আমরা এই সেতুর উপর দিয়ে বাস চালানোর আবেদন জানিয়ে পরিবহণমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছিলাম। যা খবর পাচ্ছি, ২৯ তারিখ থেকে ছাড়পত্র মিলতে পারে”, জানিয়েছেন ওয়েস্টবেঙ্গল বাস-মিনিবাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ নারায়ণ বসু বলেন। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে টালা সেতু ভাঙার কাজ শুরু হয়। ওই বছরের এপ্রিলে শেষ হয় সেই কাজ। তার পর সেতু সংস্কার শুরু হয়। টালা সেতুর সংস্কারের জন্য মোট ৪৬৫.১১ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। প্রায় আড়াই বছর পর শহর ফিরে পেল ৭৪৩.৪৩ মিটার দৈর্ঘ্যের এই সেতু।