উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর আমলে বিতর্ক যেন পিছুই ছাড়ছে না বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের। বারবার রাজনৈতিক কার্যকলাপ ও বিজেপি নেতাদের যাতায়াত দেখা যাচ্ছে কবিগুরুর স্মৃতিবিজড়িত এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। এ নিয়ে আগেই তীব্র বিতর্ক শুরু হয়েছিল শান্তিনিকেতনে। বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ প্রত্যক্ষভাবে রাজনৈতিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। আর এবার পোশাক বিতর্ক বিশ্বভারতীতে। এবং সেই বিতর্কের কেন্দ্রে ফের উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। সাদা পাঞ্জাবি পরে না আসায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিল্প উৎসবে এক অতিথিকে মঞ্চে উঠতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। যা নিয়ে ইতিমধ্যেই আলোচনা শুরু হয়েছে। শিক্ষা মহলের মতে, বিশ্বভারতীর ইতিহাসে এমন ঘটনা নজিরবিহীন।
গত অগস্ট মাসের শেষের দিকে প্রতি বছরের মতো এবছরও শিল্প মেলার আয়োজন করে বিশ্বভারতী। এ বছর সেই উৎসবকে কেন্দ্র করে এক অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয় বিশিষ্ট গবেষক অরুণেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়কে। নীল রঙের পাঞ্জাবি পরে তিনি সেদিন সেই অনুষ্ঠানে আসেন। যার ফলে তাঁকে মঞ্চে উঠতেই দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। যা নিয়ে জল ঘোলা শুরু হয়। বিশ্বভারতীর প্রাক্তনী থেকে শুরু করে অন্যান্য বিশিষ্টরাও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে সোচ্চার হন। সেপ্টেম্বরে তা নিয়ে নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়েছে। এই বিষয়ে অরুণেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, যেহেতু আমন্ত্রণের সময় কোনও পোশাকবিধির উল্লেখ ছিল না, সেই কারণে তিনি এই রীতি সম্পর্কে অবগত ছিলেন না। তাই অন্য রঙের পোশাক পরে গিয়েছিলেন।
এই বিতর্ক যখন তুঙ্গে তখন সোমবার বিশ্বভারতীর পক্ষ থেকে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে বলা হয়, ‘বিশ্বভারতীর অনুষ্ঠানে সাদা পোশাক পরে যোগদান করাই রীতি। সাম্প্রতিক শিল্প উৎসবে প্রধান অতিথি সাদা পোশাক পরে না আসায় কিছু বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। রীতি অনুসারে সকলেই মঞ্চে সাদা পোশাকে ওইদিন উপস্থিত ছিলেন।’ বিশ্ববিদ্যালয়ের এই বিজ্ঞপ্তি সামনে আসতেই ফের নতুন করে বিতর্ক দানা বেঁধেছে। প্রশ্ন উঠছে যদি বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও অনুষ্ঠানে সাদা পোশাক পরে আসা রীতি হয়ে থাকে তো সেদিনের অনুষ্ঠানে স্বয়ং উপাচার্য কীভাবে অন্য রঙের পোশাকে এলেন? বিশ্বভারতী ইউনিভার্সিটি ফ্যাকাল্টি টিচার অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে এই প্রশ্ন তোলা হচ্ছে। উল্লেখ্য, সেই অনুষ্ঠানের একটি ছবি ঘুরছে যাতে দেখা গেছে উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর পরনে রয়েছে ঘিয়ে রঙের পাঞ্জাবি! যদিও সেই ছবির সত্যতা যাচাই করেনি এখন খবর।