স্বাস্থ্যক্ষেত্রে ফের সারা দেশে উজ্জ্বল স্বাক্ষর রাখল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। এবার এসএসকেএম হাসপাতালেই শুরু হতে চলেছে আইভিএফ পরিষেবা। অন্তত ১৫০ জন দম্পতি কৃত্রিম উপায়ে গর্ভধারণের জন্য প্রস্তুত। আগামী নভেম্বর থেকেই আইভিএফ শুরু হবে। ডা. সুদর্শন ঘোষ দস্তিদার জানিয়েছেন, “কয়েকদিনের মধ্যে স্বাস্থ্য ভবনে একদফা আলোচনা হবে। এই ক’মাসে যাঁদের চিকিৎসা হয়েছে, তাঁদের বিশদ তথ্য রিপোর্ট আকারে তুলে দেওয়া হবে।” সুদর্শনবাবুর কথায়, নভেম্বর থেকে আইভিএফ চালু হবে।
উল্লেখ্য, গত ছ’মাসে পিজি হাসপাতালের আইভিএফ উৎকর্ষ কেন্দ্রে একাধিক ঘটনার সাক্ষী থেকেছেন ডাঃ সুদর্শন ঘোষ দস্তিদার ও তাঁর ছয় সহকর্মী। কখনও কোনো দম্পতিকে বেসরকারি হাসপাতাল বলেছে, দম্পতি সন্তানের স্বাদ পাবে না। আইভিএফ (ইনভিট্রো ফার্টিলাইজেশন) করেও তেমন লাভ নেই। হতাশ দম্পতি হাজির এসএসকেএম হাসপাতালের ফার্টিলিটি সেন্টারে। মাত্র তিনটি পরীক্ষা। ওষুধের বদল। কয়েকমাস পর দম্পতির মুখে খুশির ছোঁয়া। স্ত্রী সন্তানসম্ভবা।আবার কোনো দম্পতিকে বেসরকারি হাসপাতাল বলেছিল, জন্মগত ওজনের সমস্যা অর্থাৎ ওবেসিটির কারণেই সমস্যা হচ্ছে। শেষ পর্যন্ত মানসিকভাবে বিধ্বস্ত দম্পতি হাজির পিজি হাসপাতালের সেন্টার অফ এক্সেলেন্স ইনফার্টিলিটি অ্যান্ড আইভিএফ সেন্টারে। কয়েকটি ওষুধ বদলে জীবনচর্যা একটু বদলে দিতেই মিলল সুফল।
এপ্রসঙ্গে পিজি হাসপাতালের আইভিএফ সেন্টারের বিশেষজ্ঞদের মতে, শুধুমাত্র প্রজনন সমস্যার জন্য সন্তানধারণ বিলম্ব হয়, এমনটা সর্বদা ঠিক নয়। হয়তো কারও ওজন খুব বেশি। অথবা মহিলা জানতেনই না তাঁর ডায়াবেটিস বা রক্তচাপের সমস্যা আছে। এই ধরনের সমস্যা থাকলে সন্তানধারণে সমস্যা হতেই পারে। তাই কোনও রোগী উৎকর্ষ কেন্দ্রে এলে সম্ভাব্য সব রক্ত পরীক্ষা ও হরমোন টেস্ট করা হয়। হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগে এইসব পরীক্ষা করানোর পর বিভিন্ন বিভাগের বিশেষজ্ঞরা মিলে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সম্পূর্ণ নিখরচায় এই চিকিৎসা ইতিমধ্যে ভিন রাজ্যের রোগীদের কাছেও আস্থার আলো হয়ে দাঁড়িয়েছে। সারা দেশের মধ্যে সরকারি উদ্যোগে এমন কৃত্রিম প্রজনন ব্যবস্থা এই প্রথম। স্বাভাবিকভাবেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছে একাধিক মহল।