একদিকে লাগামছাড়া মুদ্রাস্ফীতি, সেই সঙ্গে টাকার দামে ক্রমাগত পতন। এর মধ্যেই অর্থনীতিবিদদের আরও আশঙ্কিত করে দেশে কমেছে বিদেশি মুদ্রার ভাণ্ডার। তাঁদের দাবি, জল প্রায় নাকের ডগায় পৌঁছে গিয়েছে। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার তথ্য অনুযায়ী, ২ সেপ্টেম্বর শেষ হওয়া সপ্তাহে ৭৯৪.১ কোটি ডলার কমে তা হয়েছে ৫৫,৩১০.৫ কোটি ডলার। যা ২০২০-এর ৯ অক্টোবরের পর সর্বনিম্ন।
জানা গিয়েছে, ডলারের নিরিখে টাকা যাতে শক্তি না হারায় তা নিশ্চিত করতে আমেরিকার মুদ্রা বিক্রি করে চলেছে শীর্ষ ব্যাঙ্ক। যা ভাণ্ডার কমার অন্যতম কারণ। উদ্বেগের বিষয় হল এই যে, ভারতের মতো দেশে মোট প্রয়োজনের বেশিরভাগ পেট্রোপণ্যই বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়। বিদেশি মুদ্রার মজুত কমলে তেল আমদানিতে ঘাটতি হতে পারে। শুধু সেখান থেকেই প্রতিবেশী দেশ শ্রীলঙ্কার মতো অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে পড়তে পারে ভারতও। ওই দেশের ক্ষেত্রে একই পরিস্থিতি হয়েছিল।
চলতি বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি দেশে বিদেশি মুদ্রা ভাণ্ডার ছিল ৬৩,১৫৩ কোটি ডলার। যা এখনও পর্যন্ত সর্বোচ্চ। পরবর্তী ছ’মাসে, অর্থাৎ ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে তা প্রায় ৮,০০০ কোটি ডলার কমেছে। এই নিয়ে টানা পাঁচ সপ্তাহে ভাণ্ডার কমেছে। বিদেশি মুদ্রা ভাণ্ডারের প্রধান উপাদান বিদেশি মুদ্রা সম্পদ। এর মধ্যে ডলারের পাশাপাশি, পাউন্ড, ইউরো, ইয়েন ইত্যাদি থাকলেও মোট সম্পদের হিসাব কষা হয় ডলারে। আরবিআইয়ের তথ্য বলছে, ২ সেপ্টেম্বর শেষ হওয়া সপ্তাহে তা ৬৫২.৭ কোটি ডলার কমে ৪৯,২১১.৭ কোটি ডলারে নেমেছে। কমেছে ভাণ্ডারের সব ধরনের বিদেশি মু্দ্রা। হ্রাস পেয়েছে সোনা, আন্তর্জাতিক অর্থ ভাণ্ডারের মজুত এবং স্পেশাল ড্রয়িং রাইটসও।