পুজোর আর বাকি মাত্র কয়েকটা দিন। দরজায় কড়া নাড়ছে বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব। জেনে নিন মহালয়া কবে তিথি। এবছর মহালয়া পড়েছে ২৫ সেপ্টেম্বর। মহালয়া মানেই দুর্গাপুজোর ছোঁয়া মনে হয়। অনেকেই বলেন রেডিও বা টিভিতে ‘মহালয়া’ হবে। এই কথা কিন্তু আদৌ ঠিক নয়। রেডিওতে বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের যে পাঠ আমরা শুনি, তার নাম ‘মহিষাসুরমর্দ্দিনী’। তাঁর রেকর্ড সম্প্রচারের সময় বারবার পরিবর্তন হতে হতে একসময় মহালয়ার দিনটিতে হয়। এত বছর সেই অনুষ্ঠান সম্প্রচার হতে হতে বাঙালি মনে করেছে দুর্গাপুজোর সঙ্গে বিশেষ যোগ রয়েছে মহালয়ার। তবে আদৌ নেই কোনও সম্পর্ক। এর আগে দুর্গাপুজোর অন্যান্য দিনেও সম্প্রচারিত হয়েছে ‘মহিষাসুরমর্দ্দিনী’ রেকর্ড। সত্যিই কি সম্পর্ক নেই মহালয়া ও দুর্গাপুজোর? মহালয়া হয় কৃষ্ণপক্ষের সমাপ্তি ও শুক্লপক্ষ সূচনার আগের অমাবস্যায়।
মানে, পিতৃপক্ষের অবসান আর মাতৃপক্ষের সূচনা। তবে নাম কেন মহালয়া? মহৎ ও আলয় এই দুই শব্দের মিলনে হয় ‘মহালয়’। তিথি যেহেতু স্ত্রী লিঙ্গ তাই মহালয় হয়েছে ‘মহালয়া’। (তিথি- প্রথমা, দ্বিতীয়া, তৃতীয়া, চতুর্থী, পঞ্চমী, ষষ্ঠী, সপ্তমী, অষ্টমী, নবমী, দশমী, একাদশী, দ্বাদশী, ত্রয়োদশী, চতুর্দশী- এই রকম) আসলে পরলোকগত পিতৃপুরুষদের তর্পণ করা হয় এই মহালয়া তিথিতে। অগ্নিপুরাণে বলা আছে, এই সময় মানে মহালয়ায় পিতৃপুরুষরা আসেন মর্ত্যে। তাঁদের উত্তরপুরুষরা (বংশধর) তাঁদের উদ্দেশ্যে তর্পণ করেন। এতে তৃপ্ত হন পূর্বপুরুষগণ। এ যেন পূর্ব পুরুষ এবং উত্তর পুরুষদের সমাবেশ। ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণে আছে নিরাকার পরব্রহ্মে লয়প্রাপ্তিই মহালয়। শ্রী শ্রী চণ্ডী পুরাণে আছে, মহালয় মানে পিতৃলোক বা পিতৃলোক স্মরণ। এই মহালয় মানে উৎসব আলয়। মহাভারতে মহালয় মানেও পিতৃলোক।