অতিমারি-পরবর্তী পর্যায়ে সারা দেশে বেকারত্ব ৪৫ শতাংশ বাড়লেও বাংলায় কর্মসংস্থানের সুযোগ বেড়েছে ৪০ শতাংশ। এবার টাটাগোষ্ঠীর আধিকারিকদের মঞ্চে বসিয়ে এমনটাই জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়্গপুরে এক সরকারি কর্মসূচিতে একথা জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা, ‘আগামী চার-পাঁচ বছরের মধ্যে কর্মসংস্থানে বাংলাকে এক নম্বরে নিয়ে যাব! এটা আমার চ্যালেঞ্জ।’
প্রসঙ্গত, এদিন খড়গপুর স্টেডিয়ামে আয়োজিত ওই কর্মসূচি থেকে টাটা স্টিলের ভাইস প্রেসিডেন্ট সঞ্জীব পলের উপস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রী উদ্বোধন করেন খড়গপুরের অদূরে টাটা মেটালিক্সের নয়া ইউনিটের। পাশাপাশি, ওই কর্মসূচিতে কারিগরি শিক্ষায় প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ছাত্রছাত্রীদের হাতে চাকরির নিয়োগপত্রও তুলে দেওয়া হয় মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে। মমতা বলেন, ‘এখন টাটা মেটালিক্স আরও ৬০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে। আগামী দিনে তা আরও বাড়বে।’ টাটা মেটালিক্সের ওই নতুন ইউনিটে আরও হাজার জনের চাকরির সুযোগ হবে বলেও জানান মুখ্যমন্ত্রী।
পুজোর আগে কারিগরি শিক্ষায় প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত মোট ৩০ হাজার জনের হাতে চাকরির নিয়োগপত্র দেওয়া হবে জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘শিলিগুড়ির কর্মসূচিতে আমি থাকব। বীরভূম, মুর্শিদাবাদ, মালদহের ছেলেমেয়েদের অনলাইনে দেওয়া হবে।’ বৃহস্পতিবারের কর্মসূচি থেকে পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, বাঁকুড়া এবং পুরুলিয়ার একগুচ্ছ সরকারি উন্নয়ন প্রকল্পের সূচনাও (১৯টি প্রকল্পের উদ্বোধন এবং ছ’টি প্রকল্পের শিলান্যাস) করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, আগামী দিনে জঙ্গলমহলের জেলাগুলিতে পর্যটনের উন্নয়নে বিশেষ গুরুত্ব দেবে রাজ্য সরকার। তাতেও বাড়বে কর্মসংস্থানের সুযোগ।
তাঁর সরকারের আমলে ৮৯ হাজার স্কুল শিক্ষক, ১০ কলেজ শিক্ষক নিয়োগের পাশাপাশি বিভিন্ন ক্ষেত্রে কর্মসংস্থানের সুযোগ অনেক বেড়েছে বলেও জানিয়েছেন মমতা। তাঁর দাবি, ‘শুধুমাত্র লেদার ইন্ডাস্ট্রি (চর্মশিল্প)-তেই আড়াই লক্ষ মানুষ কাজ পেয়েছেন। আমরা চুপচাপ কাজ করি। তাই কেউ জানতে পারেন না।’ বীরভূমের ডেউচা-পাঁচামিতে কয়লাখনি প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে এক লক্ষ চাকরির সুযোগ তৈরি হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। তাঁর অভিযোগ, ‘এই কারণেই বিজেপি, সিপিএম বাধা দিচ্ছে। কয়লাখনি হলে তো লক্ষ ছেলেমেয়ের চাকরি হবে! রাজনীতি করবে কী করে? আমি বলি, কর্মসংস্থান নিয়ে রাজনীতি করতে হবে না।’