কার্যত মুখ পুড়েছে বঙ্গ বিজেপির। গালভরা প্রচার, কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা খরচ করে এত আয়োজনের পরও মুখ থুবড়ে পড়েছে তাদের নবান্ন অভিযান। এই কর্মসূচী নিয়ে ইতিমধ্যেই দলের অন্দরে দেখা দিয়েছে মতানৈক্য। মঙ্গলবার বিজেপির এই কর্মসূচীর জেরে যানজটের সৃষ্টি হয়। ক্ষোভ উগরে দেন সাধারণ মানুষ। পাশাপাশি বিজেপি কর্মীদের বিরুদ্ধে বিশৃঙ্খলা তৈরির অভিযোগ ওঠে। তাদের আক্রমণে আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন পুলিশের আধিকারিক দেবজিৎ চট্টোপাধ্যায়। এপ্রসঙ্গে এবার সরব হলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপির নবান্ন অভিযানের সময় আক্রান্ত পুলিশ আধিকারিক দেবজিৎ চট্টোপাধ্যায়কে দেখতে বুধবার বিকেলে এসএসকেএম হাসপাতালে যান অভিষেক। হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বিজেপি গুন্ডামি চালিয়েছে বলে একহাত নেন তিনি। অভিষেক বলেন, ‘‘পুলিশ শান্তিপূর্ণ আচরণ করলেও বিনা প্ররোচনায় ইঁট-পাটকেল ছুঁড়েছেন বিজেপি নেতা-কর্মীরা।’’ এক্ষেত্রে কলকাতা হাই কোর্ট কী পদক্ষেপ নেয়, তা তিনি দেখতে চান বলে জানালেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপির বিরুদ্ধে সরকারি সম্পত্তি নষ্টের যে অভিযোগ উঠেছে, তার সমালোচনা করেছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। এ নিয়ে হাইকোর্টের একটি পুরনো নির্দেশের প্রসঙ্গ টেনে আনেন তিনি।
তৃণমূলে সাংসদ দাবি করেছেন, বিচার বিভাগের সঙ্গে যুক্ত একাংশের পক্ষপাতমূলক আচরণের জেরে আদালতের উপর থেকে ভরসা হারাচ্ছে সাধারণ মানুষ। নিজের যুক্তির স্বপক্ষে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী দেহরক্ষীর রহস্যমৃত্যু নিয়ে মামলার প্রসঙ্গও তোলেন অভিষেক। প্রসঙ্গত, কাঁথিতে শুভেন্দুর দেহরক্ষীর রহস্যজনক মৃত্যু নিয়ে তোলপাড় হয়েছিল রাজ্য রাজনীতিতে। হাই কোর্টের নির্দেশে সেই ঘটনার তদন্ত স্থগিত করে হয়। বুধবার ওই মামলার প্রসঙ্গ টেনে অভিষেক বলেন, “ভারতে এই প্রথম কোনও খুনের মামলার তদন্ত আদালতের নির্দেশে স্থগিত করে দেওয়া হয়েছে।” মঙ্গলবার পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছোড়া, পুলিশের গাড়িতে অগ্নিসংযোগ-সহ বিজেপির নবান্ন অভিযানে যে যে ঘটনা ঘটেছে, তা নিয়েও নিন্দায় সরব হন অভিষেক। কেন্দ্রে বিজেপি ক্ষমতায় থাকার কারণেই এই দলের কর্মী-সমর্থকরা এত সাহস পাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন তিনি। পুলিশকর্মী-আধিকারিকদের ধৈর্য, সংযম এবং সংবেদনশীলতা ভূয়সী প্রশংসাও করেন অভিষেক। ‘‘উত্তেজক পরিস্থিতিতে পুলিশের পক্ষে গুলি চালানো সহজ কাজ হলেও পুলিশ তা করেনি’’, জানিয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। মঙ্গলবারের বিজেপির লোকেরা পরিকল্পনা করে পুলিশের গাড়িতেও আগুন লাগিয়েছেন বলেও দাবি করেছেন অভিষেক। ‘‘ওখানে তো ধারেকাছে কোনও পেট্রল পাম্প ছিল না! তা হলে পেট্রল বা ডিজেল এল কোথা থেকে? নিশ্চয়ই আপনারা নিয়ে এসেছিলেন সঙ্গে করে!’’ প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। পাশপাশি, এই বিষয়ে হাই কোর্ট কী পদক্ষেপ নেয়, সে দিকেই তাঁর নজর থাকবে বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন তৃণমূল সাংসদ।