৫০০ বছরের পুজো। একসময় দেবীকে তুষ্ট করতে নরবলির প্রথা ছিল। তবে এখন নর বলি না হলেও নর রক্তে ভেজানো তুলোর পুতুল বলি দিয়ে সন্তুষ্ট করা হয় দেবীকে। ৫০০ বছর ধরে এটাই রীতি। কোচবিহারের রাজ আমলের বড়দেবী বাড়ির দুর্গাপুজোর আলাদা মাহাত্ম্য । প্রায় ৫০০ বছর আগে রাজ আমলে যখন এই পুজো শুরু হয়েছিল, তখন এই মন্দির গড়ে ওঠে। মন্দিরের নামেই এলাকার নাম দেবী বাড়ি। রাজ আমলের পুজো, তাই পুজোর নিয়মও আলাদা। নর রক্ত ছাড়া দুর্গা তুষ্ট হন না। একসময় দেবীকে তুষ্ট করতে নরবলির প্রথা ছিল। তবে এখন নর বলি না হলেও নর রক্তে ভেজানো তুলোর পুতুল বলি দিয়ে সন্তুষ্ট করা হয় দেবীকে। ৫০০ বছর ধরে এটাই রীতি।
আনুমানিক ১৫৬২ খ্রীষ্টাব্দে এই পুজো শুরু হয় বলে জানা গিয়েছে। রাজার স্বপ্নাদেশ মত দেবী দুর্গার একেবারেই ভিন্ন রুপ। দেবী রক্তবর্না ও সুবিশাল। দেবীর বাহন বাঘ। দেবীর দুপাশে লক্ষী গনেশ স্বরস্বতী কার্তিক নেই ৷ দেবীর দুপাশে আছে জয়া ও বিজয়া। দেবীকে তুষ্ট করতে মহারাজা নরনারায়নের আমল থেকে শুরু হয়েছিল নরবলি প্রথা ৷ তবে কিছু বছর পর সেই নরবলি বন্ধ হয়ে যায়। মাঝে বৈষ্ণব ধর্মের প্রভাবের কারণে এই নরবলি বন্ধের পর ফের সেই প্রথা চালু হয়। কিন্তু উনবিংশ শতকের শুরুতে এই প্রথা বন্ধ হয়ে যায়। রাজ আমলের ইতিহাস থেকে জানা যায়, মহারাজা শীবেন্দ্র নারায়ণ তাঁর আমলে নর বলির ভয়াবহতার কথা শুনে তা বন্ধ করেছিলেন। এরপর থেকেই নরবলি বন্ধ হলেও নর রক্তে ভেজানো পুতুল বলি দিয়ে তুষ্ট করা হয় বড় দেবীকে। অষ্টমীর রাতে গুপ্ত পুজোতে কালজানি গ্রামের এক পরিবার তাঁদের আঙ্গুল কেটে রক্ত দেন। সেই রক্তেই তুষ্ট হন বড়দেবী।