তিনি জীবিত হলেও হরিয়ানার বিজেপি সরকারের খাতায় মৃত! আর তাই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল তাঁর পেনশন। অবশেষে নিজেকে জীবিত প্রমাণ করতে এবার সুসজ্জিত রথে চেপে মাথায় রঙিন পাগড়ি, গলায় টাকার মালা এবং পরনে নতুন ধুতি-পাঞ্জাবি পরে ব্যান্ড পার্টি-সহযোগে স্থানীয় ব্লক অফিসে হাজিরা দিতে গেলেন ১০২ বছরের বৃদ্ধ। তাঁর দু-হাতে ধরা ছিল একটি প্ল্যাকার্ডও। যাতে লেখা ছিল, ‘থারা ফুফা অভি জিন্দা হ্যাঁয়’। হরিয়ানি হিন্দির এই বাক্যটির অর্থ তোমাদের পিসেমশাই এখনও বেঁচে আছেন। ঘটনাটি ঘটেছে হরিয়ানার রোহতকে। জানা গিয়েছে, বৃদ্ধের উদ্দেশ্য ছিল স্থানীয় ব্লক অফিসে গিয়ে সরকারি আধিকারিকদের সামনে প্রমাণ করে দেওয়া, যে তিনি মারা যামনি, এমনকী শয্যাশায়ীও নন। দিব্যি সুস্থ আছেন, বেঁচে আছেন।
রোহতকের গোন্ধরা গ্রামের বাসিন্দা বৃদ্ধ দুলি চাঁদ একে আজব সিদ্ধান্ত না বলে অভিনব প্রতিবাদ বলছেন। কারণ, আচমকাই তাঁর ব্যাঙ্কে পেনশনের টাকা জমা পড়া বন্ধ হয়ে গিয়েছে। লোক পাঠিয়ে খোঁজখবর করে জানতে পারেন, সরকার তাঁকে মৃত ঘোষণা করেছে।
পরিবারের লোকেরা নথিপত্র-সহ সরকারি দফতরে গিয়ে দেখান, দুলি চাঁদ আদৌ মারা যাননি। কেউ ষড়যন্ত্র করে ভুল নথি জমা করেছে পেনশন আটকে দিতে। কিন্তু সরকারি কর্তারা তাতে সন্তুষ্ট নন। তাঁদের দাবি ছিল, পেনশনভোগীকেই সশরীরের হাজির হয়ে প্রমাণ দিতে হবে তিনি মারা যাননি। পরিবারের লোকেরা বলেন, সেটা কী করে সম্ভব! তাঁর বয়স যে ১০২। সরকারি কর্তারা বলেন, আমরা নিরুপায়। পেনশন ফের পেতে হলে এটাই একমাত্র উপায়।
এর পরেই ১০২ বছর বয়সী দুলি চাঁদের মনে সরকারি ব্যবস্থার প্রতি অসন্তোষ তৈরি হয়। ঠিক করেন, এর একটা সমুচিত জবাব দেওয়া প্রয়োজন। পরিবারের সদস্যদের তিনি বলেন, ১০২ বছর বয়স বলেই তো আমাকে মৃত ঘোষণা করা হয়েছে। আমিও দেখিয়ে দেব, আমি কতটা সক্রিয় আছি। একটু পুরনো দিনে ফিরে গেলে কেমন হয়! তাঁর কথা মত, ব্যবস্থা হয় বর বেশে শোভাযাত্রা করে ব্লক অফিসে যাওয়ার। মানসরোবর পার্ক থেকে রোহতক শহরের ক্যানাল রেস্ট হাউস পর্যন্ত শোভাযাত্রা করেন তিনি। আম আদমি পার্টির হরিয়ানা ইউনিটের প্রাক্তন প্রধান নবীন জয়হিন্দ দুলি চাঁদের সঙ্গে ছিলেন। জয়হিন্দ বলেন, ১০২ বছর বয়সে বেঁচে থাকা কী অপরাধ! বেঁচে আছেন, এটার প্রমাণ দিতে আধার কার্ড, ব্যাঙ্ক স্টেটমেন্ট নিয়ে এত দূর আসতে হল।