শিখ শিক্ষার্থীরা পাগড়ি পরে শিক্ষাঙ্গানে যেতে পারলে মুসলিম মেয়েরা কেন হিজাব পরে প্রবেশ করতে পারবে না? হিজাব মামলায় এবার সুপ্রিম কোর্টে এমনই প্রশ্ন তুলেছেন মামলাকারীরা। প্রসঙ্গত, কর্ণাটকের শিক্ষাঙ্গনে ধর্মীয় পোশাকের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সে রাজ্যের বিজেপি সরকার। এর ফলে মুসলিম ছাত্রীরা হিজাব পরে শিক্ষাঙ্গনে প্রবেশ করতে পারছে না। সরকারি নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে হওয়া গুচ্ছ মামলার শুনানি শুরু হয়েছে সর্বোচ্চ আদালতে। আগের শুনানিতে বিতর্কের বিষয় ছিল পাগড়ি ও হিজাবের তুলনা। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতির মতে, পাগড়ি পরার সঙ্গে ধর্মাচরণের কোনও সম্পর্ক নেই। ওটা ধর্মীয় পোশাকও নয়।
বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট এই মামলায় মুসলিম পক্ষকে জিজ্ঞাসা করে যে ইসলামে নামাজ বাধ্যতামূলক না থাকলেও মুসলিম মহিলাদের জন্য হিজাব কীভাবে প্রয়োজনীয় এবং বাধ্যতামূলক হয়ে উঠল। বিচারপতি হেমন্ত গুপ্তা এবং বিচারপতি সুধাংশু ধুলিয়ার বেঞ্চ আবেদনকারী ফাতমা বুশরার আইনজীবী মোহাম্মদ নিজামউদ্দিন পাশাকে এই প্রশ্নটি করে। পাশা আদালতে তাঁর যুক্তিতে বলেছিলেন যে ইসলামে তার অনুসারীদের পাঁচটি নীতি (নমাজ পাঠ, রোজা রাখা ইত্যাদি) অনুসরণ করতে বাধ্য করার কোনও অনুশাসন নেই। তখনই বেঞ্চ প্রশ্ন তোলে, ‘অস্থায়ী শাস্তির অনুপস্থিতিতে, পাঁচটি প্রধান ইসলামিক নীতি যদি মুসলমানরা বাধ্যতামূলকভাবে অনুসরণ না করে, তাহলে মুসলিম মহিলাদের জন্য হিজাবকে কীভাবে আবশ্যিক বলা যায়।’
কিন্তু পাশার যুক্তি, নবী বলেছিলেন, একজন মহিলার কাছে পর্দা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আর কোরান বলেছে, নবীর বাণী অনুসরণ করতে। একজন মুসলিম মেয়ে ঘর থেকে বের হওয়ার সময় হিজাব পরতে পছন্দ করে। সরকার তাহলে কীভাবে হিজাব পরে শিক্ষাঙ্গনে প্রবেশাধিকার কেড়ে নিতে পারে? পাশা আরও বলেন, একজন শিখ ছাত্র পাগড়ি পরে শিক্ষাঙ্গনে প্রবেশ করতে পারে। অথচ হিজাব পরে একজন মুসলিম ছাত্রী স্কুল-কলেজে যেতে পারবে না। এটা আসলে একটি ধর্মকে টার্গেট করা। তিনি আরও বলেন, শিখ ধর্ম মাত্র পাঁচশো বছরের পুরনো। তাই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যদি পাঁচশো সালের ধর্মীয় অনুশীলনের অনুমতি দেওয়া হয়, তাহলে ১৪০০ বছরের বেশি পুরনো অভ্যাস, প্রথায় আপত্তি তোলা হবে কেন? ইসলাম ধর্মের বয়স তো ১৪০০ বছরের বেশি।