এবার ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দফতরের কাজকর্মকে সহজতর করতে তৎপর হল রাজ্য সরকার। পাশাপাশি দালাল চক্র দূর করতেও নেওয়া হল পদক্ষেপ। বাবা বা মায়ের মৃত্যুর পর জমি নিজের নামে মিউটেশনের জন্য আর বারবার বিএলআরও অফিসে ছুটোছুটি করতে হবে না। স্মার্ট ফোন থেকেই বা বাংলা সহায়তা কেন্দ্রে গিয়ে মিউটেশনের আবেদন করা যাবে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে জমির মিউটেশনের ক্ষেত্রে অনলাইন ব্যবস্থা চালু করল রাজ্য সরকার। সম্প্রতি এই পরিষেবা যুক্ত হয়েছে বাংলার ভূমি পোর্টালে। গত ৩১শে মে পুরুলিয়ায় প্রশাসনিক বৈঠক থেকে জমির মিউটেশন নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বিরক্তি প্রকাশ করেছিলেন। ওই বৈঠকে চার দরিদ্র আদিবাসী পরিবারের সদস্যদের ডেকে আনেন মুখ্যমন্ত্রী। মৃত বাবার জমি নিজেদের নামে মিউটেশন করাতে গিয়ে তারা দালাল চক্রের শিকার হয়েছিলেন। বাংলায় সম্পূর্ণ বিনা খরচে মিউটেশন করার সুযোগ থাকলেও, দালাল চক্র জাঁকিয়ে বসায় মানুষ কয়েক হাজার টাকা খরচ করেও মিউটেশন পাচ্ছিলেন না। এই দালাল চক্রের বিষয়টি প্রকাশ্যে এনে ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দফতরে অনলাইন ব্যবস্থা চালুর ইঙ্গিত দিয়েছিলেন মমতা।
প্রসঙ্গত, সদ্য চালু হওয়া এই অনলাইন পরিষেবার নাম দেওয়া হয়েছে, ‘ওয়ারিশ অ্যপ্লিকেশন’। বাংলার ভূমি পোর্টালে সিটিজেন সার্ভিসেস-এ ক্লিক করলেই তালিকা বেরিয়ে আসবে। সেখান থেকে ‘ওয়ারিশ অ্যাপ্লিকেশন’ অপশনটি বেছে নিতে হবে। সেখানে নিজের জেলা, ব্লক, মৌজা ও খতিয়ান নম্বর এবং বাবা বা মায়ের ডেথ সার্টিফিকেটের তথ্য জানাতে হবে। কতজন উত্তরাধিকারী ছিলেন, তাও জানানো বাধ্যতামুলক। আদালত, পঞ্চায়েত প্রধান এবং কাউন্সিলারের কাছ থেকে আইনি উত্তরাধিকারীর শংসাপত্রও পেশ করতে হবে। আবেদন পত্রের দ্বিতীয়াংশে আইনি উত্তরাধিকারীদের নাম, আধার নম্বরসহ ইত্যাদি তথ্য দিতে হবে। আবেদন জমা পড়ার পরেই, আবেদন গ্রহণের নিশ্চিতকরণ হিসেবে আবেদনকারীর মোবাইলে এসএমএস যাবে। তারপর নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই তথ্য যাচাই করে মিউটেশনের কাজ করা হবে। অনলাইনে আবেদন না করতে পারলে বাংলা সহায়তা কেন্দ্রেও আবেদন করা যাবে। কোনরকম টাকা লাগবে না। মিউটেশন অনলাইনে হওয়ায় মানুষের সুবিধা আরও বাড়বে বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্ট দফতরের আধিকারিকরা। সহজেই ভূমি সংক্রান্ত পরিষেবা পাবেন আমজনতা। তাঁদের পরিশ্রমও লাঘব হবে অনেকটাই।