অব্যাহত কেন্দ্রের দুয়োরানিসুলভ আচরণ। উৎসবের আবহেও মোদী সরকারের বঞ্চনার শিকার হল বাংলা। বাংলার রেশনে বরাদ্দ নিয়ে একেবারেই নিস্পৃহ মোদী সরকার। বিজেপি সরকারের এমন আচরণ যাতে বাঙালির পার্বণের আনন্দে বাধা হয়ে না দাঁড়ায়, তা সুনিশ্চিত করতে উদ্যোগী বাংলা। বাংলার মানুষের মুখে হাসি ফোটানোই রাজ্যে লক্ষ্য, সেই কারণে এজন্য ভর্তুকি বাবদ কোষাগার থেকে প্রায় সাড়ে ১৩ কোটি টাকা খরচ করতে চলেছে রাজ্য সরকার। রেশন গ্রাহকদের মধ্যে যাঁরা আর্থিকভাবে অনেকটাই দুর্বল, তাঁরা অন্ত্যোদয় ও এসপিএইচএইচ শ্রেণিভুক্ত। বাংলায় এই জাতীয় রেশন গ্রাহকের সংখ্যা প্রায় ৩ কোটি ২০ লক্ষ। কেন্দ্রের গরিব কল্যাণ অন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে এই গ্রাহকদের অতিরিক্ত ৫ কেজি চাল-গম দেওয়া হয়, কিন্তু উৎসবের মরশুমেও তা অব্যাহত থাকবে কি না, তা নিয়ে জমতে শুরু করেছে অনিশ্চিয়তার মেঘ। চলতি সেপ্টেম্বরেই এই প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। মেয়াদ বৃদ্ধি আদৌ করা হবে কিনা তা নিয়ে এখনও পর্যন্ত কোনো ইঙ্গিত দেয়নি মোদী সরকার।
বাংলার আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া মানুষদের যাতে মোদী সরকারের মুখ চেয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে দিন কাটাতে না হয়, এবার সেই বন্দোবস্তই সেরে ফেলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, রাজ্যের উদ্যোগে বিনা পয়সায় চাল-গম দেওয়া চলবে। প্রতি বছরের মতো এবারেও পুজোর উপহার হিসেবে ভর্তুকিতে এক কেজি চিনি ও ময়দা দেওয়া হবে বলে জানা গিয়েছে। ইতিমধ্যে অন্ত্যোদয় ও এসপিএইচএইচ শ্রেণিভুক্ত রেশন গ্রাহকদের আগামী ২৩শে সেপ্টেম্বর থেকে ৩০শে অক্টোবরের মধ্যে খাদ্যসামগ্রী দেওয়ার জন্য বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে রাজ্যের খাদ্যদফতর। কত টাকায় খাদ্য দ্রব্য মিলবে, খাদ্যদফতর তরফে তাও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। জানা গিয়েছে, গ্রাহকরা চিনি ও ময়দা যথাক্রমে ৩২ টাকা ও ২৯ টাকা প্রতি কেজি দরে পাবেন। প্রতি কেজি চিনিতে কেনা ও ডিলার-ডিস্ট্রিবিউটরদের কমিশন মিলিয়ে রাজ্যের মোট ৪৩ টাকা ৫৭ পয়সা খরচ হচ্ছে। প্রতি কেজিতে ১১ টাকা ৫৭ পয়সা ভর্তুকি দিচ্ছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। খাদ্যদপ্তর তরফে জানা গিয়েছে, সব মিলিয়ে কেবল চিনির জন্যেই সরকারকে প্রায় ৯ কোটি ৩৬ লক্ষ টাকা ভর্তুকি দিতে হচ্ছে। ময়দার ক্ষেত্রে ভর্তুকির পরিমাণ কেজি প্রতি ৫ টাকা ১০ পয়সা। রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষের কথায়, নিজ দায়িত্ব পালন করতে নারাজ মোদী সরকার, তাই রাজ্য নিজস্ব তহবিল থেকে অতিরিক্ত ভর্তুকি দিয়ে খরচ বহন করছে। একাধিক খাত মিলিয়ে মোদী সরকারের কাছে বাংলা বকেয়া টাকার পরিমাণ ১ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি। এমতাবস্থায় রাজ্যের পিছিয়ে পড়া শ্রেণির মুখে উৎসবের মরশুমে হাসি ফোটাতে উদ্যোগী রাজ্য।