অব্যাহত বিতর্ক। এবার রণতরী ‘বিক্রান্ত’ প্রসঙ্গে মোদী সরকারকে একহাত নিলেন কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ। গতকাল উক্ত রণতরীকে আত্মনির্ভরতার পথে হাঁটার প্রশ্নে উল্লেখযোগ্য মাইলফলক বলে দাবি করে সরকারের আত্মনির্ভর প্রকল্পের সাফল্য নিয়ে গালভরা প্রচার করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আর তারপরই সরব হয়েছেন জয়রাম। এতই যখন আত্মনির্ভরতার দামামা বাজানো হচ্ছে, তখন কিছু খাস বন্ধুকে ফায়দা পাইয়ে দিতে কেন এই সরকার প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে অপরিহার্য তিনটি রাষ্ট্রয়ত্ত সংস্থাকে বিক্রি করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে? কেন্দ্রকে কটাক্ষ করে এমনই প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।
প্রসঙ্গত, শনিবার নরেন্দ্র মোদীর উপস্থিতিতে আনুষ্ঠানিক ভাবে ভারতীয় নৌ-সেনায় অন্তর্ভুক্ত হয় স্বদেশী প্রযুক্তিতে তৈরি আইএনএস বিক্রান্ত। সেই অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে আত্মনির্ভর ভারতের প্রকৃত উদাহরণ হিসাবে এই রণতরীকে তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি দাবি করেন, স্বদেশি প্রযুক্তিতে তৈরি আইএনএস বিক্রান্ত হল আত্মনির্ভর ভারত প্রকল্পের শ্রেষ্ঠ উদাহরণ। সরকারের দাবি, প্রায় একশোটির কাছাকাছি দেশীয় ক্ষুদ্র, কুটির ও মাঝারি উদ্যোগ শিল্পের সরবরাহ করা সরঞ্জাম ও যন্ত্রপাতি দিয়েই ওই জাহাজটি নির্মাণ করা হয়। রবিবার এর বিরুদ্ধে সরব হন কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ। স্মরণ করিয়ে দেন যে, গত আট বছরে মোদী সরকার ব্যাঙ্ক-সহ একাধিক রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাকে বিক্রি করে দিয়েছে বা বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এবিষয়ে কংগ্রেস-সহ দেশের অন্যান্য বিরোধী দলগুলির অভিযোগ, স্বাধীনতার পর থেকে তৎকালীন সরকারেরা যে স্থায়ী সম্পদ তৈরি করে গিয়েছিল, তা বিক্রি করে কোষাগারের ঘাটতি মেটাচ্ছে মোদী সরকার। জয়রাম বলেন, ‘‘যে সরকার প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে আত্মনির্ভর হওয়ার ডাক দেয়, তারাই ভারত আর্থ মুভার্স লিমিডেড (বিইএমএল), গার্ডেনরিচ শিপবিল্ডার্স কিংবা মিশ্র ধাতু নিগমের মতো রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাকে বিক্রি করে দিতে চাইছে। সামরিক দিক থেকে ওই তিনটি সংস্থার প্রবল গুরুত্ব রয়েছে এবং এদের কাছে যা রয়েছে, তা হল বিপুল পরিমাণে জমি। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী সম্ভবত নিজের খাস বন্ধুদের ফায়দা করে দিতে চান।’’ পাশাপাশি বিরোধীদের অভিযোগ, পরিকল্পিত পথেই গত আট বছর ধরে দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলিকে বেচে দেওয়ার কৌশল অবলম্বন করছে মোদী সরকার। আর এর ফলেই অদূর ভবিষ্যতে সরকারি সংস্থার বসে যাওয়ার সুযোগ নিয়ে নিজেদের মুনাফা বাড়িয়ে তুলবেন সরকার-ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীরা।