অবসরপ্রাপ্ত আমলা ডিজি ভানজারা শীর্ষ আদালতের কাছে সংস্কৃতকে রাষ্ট্র ভাষা ঘোষণার আবেদন জানিয়েছিলেন। তবে এবার সেই দাবি খারিজ করে দিল সুপ্রিম কোর্ট। সর্বোচ্চ আদালত আবেদনটি খারিজ করে দিয়ে বলেছে যে এটি একটি নীতিগত সিদ্ধান্ত। এর জন্য সংবিধান সংশোধন প্রয়োজন। জনস্বার্থ মামলাটি বিবেচনায় নিজেদের অসহয়তার কথা বলার পাশাপাশি আদালত আজ সংস্কৃতকে রাষ্ট্রভাষা করার প্রয়োজনীয়তা নিয়েও প্রশ্ন তোলে।
স্বয়ং আবেদনকারী এই ভাষাতে কতটা সরগড় তা বুঝতে বেঞ্চ তাকে সংস্কৃতে একটি লাইন আবৃত্তি করতে বলে। আবেদনকারী একটি শ্লোক শোনান আদালতকে। বিচারপতিরা বলেন, এই শ্লোক তো সকলেই জানেন। এটার জন্য তো সংস্কৃত শেখার প্রয়োজন হয়নি কারও।
আবেদনকারী সংস্কৃতকে রাষ্ট্র ভাষা ঘোষণার মাধ্যমে এটির প্রসারের কথা বলেন। এ বিষয়ে বিচারপতি এমআর শাহ ও বিচারপতি কৃষ্ণ মুরারির বেঞ্চ বলে, ‘এটা রাষ্ট্রের নীতিগত সিদ্ধান্তের বিষয়। এর জন্য সংবিধান সংশোধনেরও প্রয়োজন হবে। কোনও ভাষাকে জাতীয় ভাষা ঘোষণার ব্যাপারে আদালতের কিছু করণীয় নেই।’ ডিভিশন বেঞ্চ আবেদনকারীকে প্রশ্ন করে, ‘ভারতের ক’টি শহরে মানুষ সংস্কৃততে কথা বলে?’ আবেদনকারী ভানজারা বলেন, তিনি কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে এই বিষয়ে আলোচনা চান। তার জন্য আদালতের সহায়তা জরুরি। যা সরকারি স্তরে আলোচনা শুরু করতে সহায়ক হবে।
ডিভিশন বেঞ্চ মামলাকারীর কাছে জানতে চায়, ‘আপনি কি সংস্কৃততে কথা বলেন? আপনি কি সংস্কৃতে একটি লাইন বলতে পারেন বা আপনার রিট পিটিশনটি সংস্কৃততে অনুবাদ করতে পারবেন?’ অবসরপ্রাপ্ত আমলা এই প্রশ্নের জবাব দেননি। তিনি স্লোক শোনালে বিচারপতিরা বলেন, এটা সংস্কৃত না শেখা মানুষেরাও জানেন, বলতে পারেন। কিন্তু অবসরপ্রাপ্ত ওই আমলা ব্রিটিশ আমলে সুপ্রিম কোর্টের একজন বিচারপতির রায়ের উল্লেখ করেন। তাতে তিনি বলেছিলেন যে সংস্কৃত হল মাতৃভাষা। জবাবে দুই বিচারপতির বেঞ্চ বলে, ‘আমরাও এ বিষয়ে একমত। আমরা জানি যে হিন্দি এবং অন্যান্য রাজ্যের অনেক ভাষার শব্দ এসেছে সংস্কৃত থেকে। কিন্তু এর ভিত্তিতে কোনও ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে ঘোষণা করা যাবে না। ভাষা ঘোষণা করা আমাদের পক্ষে খুবই কঠিন।’