বড়সড় বিপাকে গেরুয়াশিবির। ফের গুরুতর অভিযোগের তির ধেয়ে এল ‘ডবল ইঞ্জিন’ মেঘালয়ের বিজেপি নেতা বার্নার্ড মারাকের দিকে। যৌনব্যবসা চালানোর অভিযোগে আগেই গ্রেফতার করা হয়েছিল তাঁকে। এর পর তাঁর জোর করে খাবারের দাম বৃদ্ধি করার অভিযোগ উঠল। ফের তাঁকে গ্রেফতার করল মেঘালয় পুলিশ। যৌনব্যবসা চালানোর অভিযোগে দিন কয়েক আগেই তাঁকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছিল মেঘালয়ের তুরা এলাকায় নিজের খামারবাড়িতে ধৃত বিজেপি নেতা যৌনব্যবসা চালাতেন বলে অভিযোগ। তাঁর বিরুদ্ধে জারি করা হয় লুক আউট নোটিশ। সম্প্রতি উত্তরপ্রদেশের হাপুর জেলা থেকে পাকড়াও করা হয় মেঘালয় বিজেপির সহ-সভাপতি বার্নার্ড মারাককে। দেহব্যবসায় শিশুদেরও শামিল করতেন বিজেপি নেতা, এমনটাই জানিয়েছে পুলিশ। অন্তত ৬টি শিশুকে উদ্ধার করা হয়েছে তাঁর ওই খামারবাড়ি থেকে। ওই ব্যবসায় জড়িত থাকার অভিযোগে আর ৭৩ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে অস্ত্রশস্ত্র ও বিস্ফোরক জমিয়ে রাখারও অভিযোগ রয়েছে। তুরা এলাকায় তাঁর খামারবাড়িতে তল্লাশি করে প্রচুর বিস্ফোরক ও অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার করে পুলিশ। এবার একটি গুরুতর কাণ্ডে ফের বার্নাডকে গ্রেফতার করল মেঘালয় পুলিশ। তুরা এলাকায় খাদ্যদ্রব্যের দামবৃদ্ধির নেপথ্যেও ছিলেন এই বিজেপি নেতা।
উল্লেখ্য, গত মাস কয়েক ধরেই উত্তরোত্তর বেড়েছে তুরা এলাকায় সমস্ত খাদ্যসামগ্রীর দাম। প্রয়োজনীয় দ্রব্য থেকে শুরু করে স্ন্যাকস, ফলমূল, সবজি, ডিম, মাংস সমস্ত কিছুর দামই আকাশছোঁয়া। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, বার্নার্ডের নির্দেশেই ওই দাম বাড়ানোর ঘোষণা করা হয়েছিল মেঘালয়ের চেম্বার অব কমার্সের তরফে। এছাড়া সদস্যপদের ফি বাবদ দোকানীদের কাছ থেকে নাকি বড় অঙ্কের তোলাও আদায় করতেন বার্নার্ড। আর সেই কাজে তাঁকে সাহায্য করেছে চেম্বার অব কমার্স। দোকানীদেরকে দিয়ে জোর করে জিনিসপত্রের দাম বাড়িয়েছিল সংগঠনটি। যাতে ওই তোলার টাকা পেতে কোনও অসুবিধা না হয়। আদিবাসী সম্প্রদায়ভুক্ত নন যাঁরা, সেই সব দোকানীদের নানা ভাবে হুমকি দিতেন ওই বিজেপি নেতা। অথচ চেম্বার অব কমার্স সংগঠনটি আদৌ কোনও বিশেষ গোষ্ঠী বা ব্যক্তির সংগঠন নয়। তা সত্ত্বেও আদিবাসী নন, এমন দোকানীদের লাইসেন্স বাতিলের হুমকি দিত সংগঠনটি। আদায় করা হত প্রচুর টাকাও। একথা জানার পরই গত মঙ্গলবার বার্নার্ডকে ফের গ্রেফতারির নির্দেশ দেয় তুরার ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। পাশাপাশি ওই বিজেপি নেতাকে পাঁচ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। তার পরেই ফের নয়া মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে মেঘালয়ের ওই বিজেপি নেতাকে। এর আগে পকসো ও মানবপাচার বিরোধী আইনের আওতায় তাঁর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছিল। তাছাড়াও ছিল বাড়িতে বিস্ফোরক জমানোর অভিযোগও। ওই দুটি মামলায় ইতিমধ্যেই তাঁকে ১৪ দিনের বিচারবিভাগীয় হেফাজকের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। এবার তার সঙ্গে যোগ হল খাদ্য কেলেঙ্কারির নয়া মামলা। মেঘালয় ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স সরকারের সমালোচনা করার জন্য এমনিতেই সর্বদা শিরোনামে থাকতে দেখা যেত এই বিজেপি নেতাকে। সেই বার্নার্ডের বিরুদ্ধে এমন গুরুতর অভিযোগ ওঠার পরে চরম অস্বস্তিতে পড়েছে সে রাজ্যের বিজেপি-নেতৃত্ব।