দলীয় অন্তর্দন্দ্ব এখনও পিছু ছাড়ছে না গেরুয়াশিবিরের। একুশের বিধানসভার নির্বাচনের পর থেকেই বারবার গোষ্ঠীকোন্দলে জর্জরিত হয়েছে বিজেপি। এবার তার ছায়া পড়ল দলের প্রশিক্ষণ শিবিরেও। সোমবার থেকে রাজ্য বিজেপি’র তিন দিনের প্রশিক্ষণ শিবির শুরু হয়েছে কলকাতায়। এই প্রশিক্ষণ শিবিরে ডাকা হয়েছে দলের সব সাংসদ, বিধায়ক ও রাজ্য নেতাদের। অথচ দেখা গেল সেখানে অনুপস্থিত রাজ্য থেকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় জায়গা পাওয়া তিন মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর, নিশীথ প্রামাণিক এবং জন বার্লা। উপস্থিত কেবলমাত্র কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকার। নির্দিষ্ট সময়েই শিবিরে এসেছেন বিজেপি’র এই আদি নেতা। ফলত স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে বৈদিক ভিলেজে দলের প্রশিক্ষণ শিবির হচ্ছে, অথচ সেখানেও দলের আভ্যন্তরীণ মতানৈক্য মেটার কোনও আভাস মিলছে না কেন? প্রশিক্ষণ শিবিরের পরও আদৌ এই দ্বন্দ্ব মিটবে কী না তা নিয়ে যথেষ্টই সন্দিহান বিজেপিরই একাংশ। যা ইতিমধ্যেই দুশ্চিন্তা বাড়িয়েছে দলের অন্দরে।
পাশাপাশি, মোদী সরকারের মন্ত্রিসভা থেকে বাবুল সুপ্রিয় এবং দেবশ্রী চৌধুরীকে বাদ দিয়ে রাজ্যের অন্য চার সাংসদকে মন্ত্রী করেছিল বিজেপি। বাবুল বিজেপি ছেড়ে এখন রাজ্যে তৃণমূল সরকারের মন্ত্রী। তবে দেবশ্রী এসেছেন শিবিরে। এসেছেন বর্তমানে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুভাষও। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মঞ্চেও ছিলেন তিনি। কিন্তু বাকিদের দেখা মেলেনি মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত। বাকি দেড় দিনের শিবিরেও তাঁরা আসবেন না বলেই মনে করছে পদ্মশিবির। তাঁর মতো বাকি দু’জনও যে আসবেন না তা জানিয়ে দিয়েছেন শান্তনু। তিনি বলেন, ‘‘কেউই আসবেন না। কেন আসবেন না, আমি বলতে পারব না। তবে আসবেন না।’’ বনগাঁর সাংসদ শান্তনুকে এর আগেও বিদ্রোহী হয়ে উঠতে দেখা গিয়েছে। তিনি কলকাতায় রাজ্য বিজেপির বিদ্রোহীদের নিয়ে বৈঠকও করেছিলেন। সেটাও আবার মন্ত্রী হওয়ার পরে সরকারি গেস্ট হাউসে। শুধু তাই নয়, একাধিক জায়গায় বিদ্রোহীদর নিয়ে চড়ুইভাতির আয়োজনও করেছিলেন তিনি। অন্যদিকে বারবার পৃথক উত্তরবঙ্গের দাবি তুলে দলকে অস্বস্তিতে ফেলতে দেখা গিয়েছে বার্লাকে। রাজ্য বিজেপির বিদ্রোহী শিবিরের সঙ্গে দিল্লীতে বৈঠক করতে দেখা গিয়েছে নিশীথকে। উক্ত সবকটি ঘটনাই অস্বস্তি বাড়িয়েছে গেরুয়া-নেতৃত্বের।