এবার দেশজোড়া মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব পড়ল গোদ গেরুয়াশিবিরের অন্দরেই। নরেন্দ্র মোদীর জমানায় মাত্রাতিরিক্ত মূল্যবৃদ্ধির জেরে নাস্তানাবুদ আমজনতা। এবার এই আগুন দামের প্রকোপ থেকে রেহাই পেল না বিজেপিও। সোমবার থেকে বঙ্গ বিজেপিতে তিনদিনের প্রশিক্ষণ শিবির শুরু হচ্ছে। সেই শিবিরের আমন্ত্রিত সদস্যদের থেকে মাথাপিছু ৫০০ টাকা শুল্ক নিচ্ছে বিজেপি। এর আগে শুল্কর পরিমাণ ছিল ২০০। বিজেপির আরও বড় দ্বিচারিতা হয়, এই শুল্ক বিজেপি আমন্ত্রিতদের থেকে নগদে নিচ্ছে। তবে কি মোদীর নিজের দলই, তার ডিজিটাল ইন্ডিয়া কর্মসূচীর সঙ্গে সহমত নয়? স্বাভাবিকভাবেই উঠছে প্রশ্ন। বিজেপির অন্দরে একাংশের মধ্যে এই পাঁচতারা রিসর্টে শিবির আয়োজন নিয়ে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। বিক্ষুব্ধদের কথায়, সঙ্ঘ তাদের ত্যাগ-তিতিক্ষার শিক্ষা দিয়েছে। সেখানে পাঁচতারা রিসর্টে প্রশিক্ষণ শিবিরের আয়োজন করে বঙ্গ বিজেপির এক দল নেতা ক্ষমতা আর অর্থের চমকে সঙ্ঘের মতাদর্শেই আঘাত করেছেন। তারাই বলছেন সাধারণ জায়গায় আড়ম্বরহীনভাবে আগে প্রশিক্ষণ শিবির হত। হাওড়ার রামকৃষ্ণ ধর্মশালা, হলদিয়া গেস্ট হাউস, মহারাষ্ট্র নিবাস হলের মতো জায়গায় নেতাদেরকে রেখে প্রশিক্ষণ চলত। কিন্তু ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে বাংলা ১৮টি আসন জিতেই বঙ্গ বিজেপির নেতাদের কয়েকজনের মধ্যে অহংকার চলে আসে।
পাশাপাশি, বৈদিক ভিলেজে শিবির করার বিরোধীরা জানাচ্ছেন, ১৯-এর জয়ে আত্মতুষ্ট কয়েকজন নেতা গত তিনবছর রাজ্য বিজেপির প্রশিক্ষণ শিবির কার্যত তুলে দিয়েছিল। দলের সংগঠনের তথৈবচ অবস্থা, রাজ্য ও জেলাস্তরে কোন্দলের কারণ হিসেবে এই ঘটনাকেই দায়ী করছেন তারা। দলবদলকারী ও নব্য নেতাদেরকেই কাঠগড়ায় তুলছেন কেউ কেউ। আবার বিজেপির একাংশের মত, এখন প্রশিক্ষণ শিবিরের যথার্থ সময় নয়। শাসক দলের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে আন্দোলনের বদলে পাঁচতারার বিলাস-বৈভবকে এই সময় ও পরিস্থিতির পরিপন্থী বলেই মনে করছেন তারা। দলীয় কর্মী-সমর্থকদের পাশে না দাঁড়িয়ে রিসর্টে পিকনিক প্রশিক্ষণের যৌক্তিকতা খুঁজে পাচ্ছেন না তারা। ফলত এই শিবির ফের প্রকাশ্যে আনল বঙ্গ বিজেপির আভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব।