নজিরবিহীন আক্রমণে বিরোধী শিবিরকে কার্যত হুঁশিয়ারি দিলেন তৃণমূল সুপ্রিম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার মেয়ো রোডে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠান থেকে বিরোধীদের এক অর্থে তুলোধোনা করলেন মমতা। দলের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ইস্যুতে একের পর এক বিরোধী শিবিরের আক্রমণের এক অর্থে জবাব ছুড়ে দিলেন মমতা। দুর্নীতির সঙ্গে তাঁর ও তাঁর দলের বহুদূর পর্যন্ত কোনও যোগ নেই বলেই দাবি তৃণমূল সুপ্রিমোর। তাঁর বিরুদ্ধে আঙুল তোলার আগে বিরোধীদের সতর্ক করে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন তিনি বলেন, “আমার এভিডেন্স দেওয়া আছে। আমাকে দেখান। আমি এমপি হিসাবে পেনশন নিই না। আমি মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে এক পয়সাও নিইনি। যোগ করে দেখবেন কত হল। সরকারি গাড়ি কম চড়ি। আমার বাড়ি, ঠিকাসত্ত্ব। আইন অনুযায়ী আমি প্রজা।” বিজেপি-সিপিএমের বার বার খোঁচার জবাব দিতেও ছাড়েননি মমতা। তিনি বলেন, “আমি কেন বই বিক্রি করব সেটাও ওদের জ্বালা। গিয়ে দেখো, বইমেলায় কেন বই আমার বেশি বিক্রি হল? লিখুন না বই! ১০০০ কবিতার বই লিখে দেখান! মমতা আরও বলেন, “পুরষ্কারের প্রতি কোনও লোভ নেই আমার।
কেন ব্রাত্য আমায় পুরষ্কার দিল তা নিয়েও ওদের আপত্তি।” তৃণমূল কংগ্রেস ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসের সমাবেশে এদিন বক্তব্য রাখতে উঠে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখে প্রথমবার উঠে এল পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নাম। ইডি-র হাতে এই হেভিওয়েট মন্ত্রীর গ্রেফতারির পর এর আগে পর্যন্ত তাঁর নাম একবারের জন্য মুখে আনেননি মমতা। কিন্তু মেয়ো রোডের সভা থেকে এদিন কেন্দ্রকে আক্রমণ শানাতে গিয়ে মমতার মুখে উঠে এল রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর কথাও। তিনি বলেন, ”পার্থ-অনুব্রত-ববি চোর, আর আপনারা সাধু!” এর আগে অনুব্রতর পাশে সরাসরি দাঁড়ালেও এদিনই প্রথম পার্থর পাশে দাঁড়ালেন তৃণমূল নেত্রী। যদিও এরপরই তিনি বলেন, ”পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের দোষ হলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ডেকে আনবে, ববির কিছু হল, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডেকে আনবে। এখনও কিছু প্রমাণ হয়নি, বিচার চলছে। কিন্তু বিচারব্যবস্থাকে প্রভাবিত করার চেষ্টা চলছে।” এদিন রুদ্রমূর্তি ধারণ করে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ”বড় বড় কথা। আমি রাজনীতিতে এসেছি সমাজসেবা করব বলে। কয়েকটা ভাড়া করা, চোর ধাপ্পাবাজ নেতাদের সাহায্যে মমতা বন্দোপাধ্যায়ের গায়ে কালি ছেটাও। বিজেপি দল এই আট বছরে দেশটাকে বারোটা বাজিয়েছে। কোটি কোটি টাকা দিয়ে নিজেদের ভান্ডার ভরাচ্ছে।”