নিমেষেই ধূলিসাৎ! চকিতে গুঁড়িয়ে দেওয়া হল উত্তরপ্রদেশের নয়ডার টুইন টাওয়ারকে। কথা ছিল রবিবার দুপুর আড়াইটে নাগাদ একটি মাত্র বোতামে টিপে ধ্বংস করা হবে এই বেআইনি নির্মাণ। সেই মতো কাজ হল। মাত্র ৯ সেকেন্ডে ধুলোয় মিশে গেল এই বিরাট অট্টালিকা। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ৩ হাজার ৭০০ কেজি বিস্ফোরকের সাহায্যে গুঁড়িয়ে দেওয়া হল ১০ বছর ধরে তৈরি করা গগনচুম্বী যমজ অট্টালিকা। নিমেষে মাটিতে নেমে এল ১০০ মিটার উচ্চতার অ্যাপেক্স ও ৯৭ মিটার উঁচু সিয়ানে নামের দুটি টাওয়ার। চোখের সামনে ধুলোর মেঘে ঢেকে গেল গোটা এলাকা। শুরু হয়েছে ধ্বংস পরবর্তী কাজ। তবে ৮০০০ টন ধ্বংসাবশেষ সরাতে সময় লাগবে তিন মাস। প্রসঙ্গত দু’টি টাওয়ারের মধ্যে ১৬ মিটার দূরত্ব থাকার কথা ছিল, অথচ নির্মাণ সংস্থা দূরত্ব রাখে মাত্র ৯ মিটার। আরও গুরুতর অভিযোগ ছিল নির্মাণ সংস্থার বিরুদ্ধে। জানা গিয়েছে, সুপারটেক এমারেল্ড কোর্ট হাউজিং সোসাইটি ১৪ তলা অট্টালিকার অনুমোদন দেয়। কথার খেলাপ করে নির্মাণ সংস্থা। তারা দাবি করে, তাদের কাছে ৪০ তলা টাওয়ারের অনুমোদন রয়েছে। যদিও তা মানতে চায়নি হাউজিং সোসাইটি।
উল্লেখ্য, গত ২০১২ সালে এলাহাবাদ হাই কোর্টে মামলা করে এমারেল্ড কোর্ট হাউজিং সোসাইটি। ২০১৪ সালে হাউজিং সোসাইটির পক্ষে রায় দেয় হাই কোর্ট। টুইন টাওয়ার ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেন বিচারপতিরা। পরে সুপ্রিম কোর্টও একই রায় দেয়। রবিবারের ধ্বংসযজ্ঞে বিপদ এড়াতে একাধিক পদক্ষেপ করেছিল নয়ডা প্রশাসন। রবিবার সকাল থেকে জোড়া টাওয়ার সংলগ্ন এলাকা থেকে সমস্ত বাসিন্দাকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরানোর কাজ শুরু হয়েছিল। বিস্ফোরণের আগেভাগে বন্ধ করে দেওয়া হয় নয়ডা-গ্রেটার নয়ডা এক্সপ্রেসওয়ে। এছাড়াও যমজ অট্টালিকার ৪৫০ মিটারের মধ্যে সব রাস্তা বন্ধ রাখা হয়। ওই এলাকায় বিমান চলাচলেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। পাইপলাইনে এলাকায় গ্যাস সরবরাহের কাজও বন্ধ ছিল সকাল থেকে। দুপুর একটা নাগাদ নিরাপত্তারক্ষীদেরও সরানো হয় টুইন টাওয়ার এলাকা থেকে। বিপদে ব্যবস্থা নিতে তৈরি রাখা হয় দমকল থেকে অ্যাম্বুলেন্স। নিকটবর্তী হাসপাতালে ৫০টি বেড বুক করে প্রশাসন। তৈরি রাখা হয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর দু’টি দলকেও। অন্যদিকে দূষণ নিয়ন্ত্রণে এমারেল্ড কোর্ট চত্বরে ১১টি স্মগ গান নিয়ে আসা হয়েছে।