আজকাল টিভির পর্দা খবরের কাগজে চোখ রাখলেই হত্যা অপহরণ ধর্ষণের ঘটনা উঠে আসে। তেমন আরও একবার নৃশংসতার স্বীকার হতে হল এক গৃহবধূকে। কোলের সন্তানকে ছুঁড়ে ফেলে এক গৃহবধূকে গণধর্ষণের অভিযোগ। উত্তর ২৪ পরগনার সীমান্ত এলাকা বাগদার এহেন ঘটনায় তোলপাড় গোটা রাজ্য। অভিযুক্ত জওয়ানদের গ্রেপ্তার করে ৭ দিনের পুলিশ হেফাজতে পাঠানো হয়েছে। ঘটনায় সন্ত্রস্ত এলাকাবাসী। যাঁদের হাতে জনতার নিরাপত্তার ভার, সেই জওয়ানই যখন ‘ভক্ষক’ হয়ে ওঠেন, তখন তো এই আশঙ্কা স্বাভাবিক। এই পরিস্থিতিতে বিএসএফের ভূমিকা নিয়ে এবার প্রতিবাদ মিছিলে নামছে রাজ্যের শাসকদল। জানা গিয়েছে, রবিবার দুপুর নাগাদ বাগদায় মিছিল করবে তৃণমূলের প্রতিনিধিদল। মিছিলের নেতৃত্ব দিতে পারেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। ঘটনার সূত্রপাত দিন দুই আগের। বৃহস্পতিবার রাতের অন্ধকারে পটল খেতে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে বিএসএফের এক এএসআই ও এক কনস্টেবলের বিরুদ্ধে। উত্তর ২৪ পরগনার বাগদা থানার জিতপুর সীমান্তের ঘটনার পর শুক্রবার বিকেলে ওই মহিলা বাগদা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। সন্ধেয় পুলিশ অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করে। শনিবার তাদের বনগাঁ মহকুমা আদালতে তোলা হলে দু’জনকে ৭ দিনের পুলিশ হেফাজতে পাঠানো হয়।
পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃতদের নাম আলতাফ হোসেন এবং এস পি চেরো। তারা বিএসএফের ৬৮ নম্বর ব্যাটেলিয়নে কর্মরত। ঘটনার পর তাদের সাসপেন্ড করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এই ঘটনার খবর প্রকাশ্যে আসতেই গর্জে উঠেছে তৃণমূলের মহিলা প্রতিনিধিরা। টুইটে শশী পাঁজা, কাকলি ঘোষ দস্তিদাররা আধা-সামরিক বাহিনীর দ্বারা একজন মহিলার হেনস্তা একেবারেই গ্রহণীয় নয় বলে প্রতিবাদে মুখর হয়ে ওঠেন। তবে এই প্রতিবাদে আরও ছড়িয়ে দিতে চান তাঁরা। দলের নির্দেশে শনিবার বিকেলেই বাগদা যাচ্ছে এক প্রতিনিধিদল। রবিবার সেখানে প্রতিবাদ মিছিল হবে। হাঁটবেন কুণাল ঘোষ, দেবাংশু ভট্টাচার্যরা। শনিবার সাংবাদিক সম্মেলন করে দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ তীব্র প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, ”একদিকে নরেন্দ্র মোদী স্বাধীনতা দিবসের ভাষণ থেকে মহিলাদের নিরাপত্তা উন্নয়নের কথা মুখে বলছে আর অন্যদিকে কী ঘটছে? তৃণমূল বিএসএফের বিরুদ্ধে নয়। তাদের কাজ নিয়ে বলার নেই। সমস্যা হচ্ছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর তত্ত্বাবধানে যেভাবে এদের ব্যবহার করছেন, তাতে রক্ষকই ভক্ষক হয়ে উঠছে। এই কারণেই কি প্রধানমন্ত্রী ১৫ থেকে ৫০ কিলোমিটার করেছেন? আর সেখানে বিএসএফ যখন রাজ্যের উপর দখলদারি বাড়াচ্ছে, সেখানে একজন মাকে গণধর্ষিত হতে হল?”