লড়াইটা কঠিন ছিল। কিন্তু অফুরান জীবনীশক্তি আর কাজের প্রতি অদম্য ইচ্ছেয় এতদিন মারণ রোগের বিরুদ্ধে লড়েছিলেন তরুণ সাংবাদিক স্বর্ণেন্দু দাস। মঙ্গলবার সকালে সেই যুদ্ধ শেষ হল। কর্কটরোগে জীবনদীপ নিভল স্বর্ণেন্দুর। বৃষ্টিভেজা সকালে এই শোকবার্তায় মনখারাপ হয়ে গিয়েছে বাংলার সাংবাদিক মহলের। দুঃসংবাদ শুনে মর্মাহত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। টুইট করে স্বর্ণেন্দুর পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানালেন তিনি। লিখলেন, দক্ষ ও বুদ্ধিদীপ্ত এক ব্যক্তিত্বকে হারাল সাংবাদিক জগত।
রাজ্যের এক বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের তরুণ সাংবাদিক স্বর্ণেন্দু দাসের ক্যানসার আক্রান্ত হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়ে। চিকিৎসার বিপুল ব্যয় বহন করা খুবই কঠিন ছিল তাঁর পরিবারের পক্ষে। তাই সাংবাদিকের সাহায্যার্থে এগিয়ে এসেছিলেন তাঁর বন্ধু, শুভাকাঙ্খীরা। সোশ্যাল মিডিয়ায় সাহায্যের আবেদন জানিয়েছিলেন তাঁরা। ‘ক্রাউড ফান্ডিং’য়ের মাধ্যমে বন্ধুকে বাঁচানোর কাতর আর্জি তাঁদের।
এরই মাঝে নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক চলাকালীন মুখ্যমন্ত্রীর কাছে স্বর্ণেন্দু দাসের বিষয়টি তোলেন তাঁরই কোনও সতীর্থ। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করেন। সেসময় মুম্বইতে চিকিৎসা চলছিল স্বর্ণেন্দুর। সে কথাও জানতে পারেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপরই তিনি স্বর্ণেন্দুর চিকিৎসার দায়িত্ব নেন।
মুখ্যমন্ত্রী প্রথমেই এসএসকেএমের কথা উল্লেখ করেছিলেন। বলেছিন, ‘ওঁকে বাইরে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করানোর দরকার কী? এসএসকেএমে নিয়ে আসা হোক। এখানে ভাল চিকিৎসা হয়। ওঁর যাতায়াতের ভাড়া আমরা দেব। চিকিৎসার খরচও রাজ্য সরকারের’। তারপর স্বর্ণেন্দুর চিকিৎসা চলছিল এখানেই। মঙ্গলবার ভোরে সকলকে কাঁদিয়ে চলে গিয়েছেন স্বর্ণেন্দু। তাঁর পরিবারই শুধু নয়, সহকর্মীরাও শোকাহত। আর রাজ্যবাসীর সর্বময় ‘অভিভাবিকা’ হিসেবে হৃদয়ভাঙার অনুভূতি স্পর্শ করল মুখ্যমন্ত্রীকেও। টুইটবার্তায় তা প্রকাশ করলেন তিনি। স্বর্ণেন্দুর পরিবারের পাশে তিনি সর্বদাই রয়েছেন বলেও বার্তা দিলেন।