প্রায় দু’কোটি টাকা খরচ করে রাজ্য বিজেপির তিনদিনের ‘প্রশিক্ষণ শিবির’ বসছে পূর্ব ভারতের অন্যতম বিলাসবহুল রিসর্ট বৈদিক ভিলেজে। প্রধানমন্ত্রীর গরিব দূরীকরণ কর্মসূচি বাংলার গ্রামে গ্রামে তুলে ধরার লক্ষ্যে এই ‘সেভেন স্টার’ শিবিরকে রাজ্যের আদি বিজেপি নেতারা ‘বড়লোকের পিকনিক’ বলে কটাক্ষ করেছে।
আগামী ২৯ আগস্ট থেকে এই রিসর্টে বাংলার নির্বাচিত শ’দেড়েক প্রতিনিধির পাশাপাশি কেন্দ্রীয় বিজেপি নেতা বি এল সন্তোষ ও অমিত মালব্যরা উপস্থিত থাকবেন। আসতে পারেন নয়া পর্যবেক্ষক সুনীল বনশল ছাড়াও আরও কয়েকজন সর্বভারতীয় নেতা।
প্রশিক্ষণ শিবিরের নামে রাজারহাটের বৈদিক ভিলেজের প্রায় দেড়শো কটেজ ও সুইট বুক করছে রাজ্য বিজেপি। শুধুমাত্র নেতা নয়, তার ঘনিষ্ঠদের জন্যও আলাদা করে বেশ কিছু সুপার ডিলাক্স কটেজ বুকিং করা হচ্ছে। মহিলানেত্রীদের পাশাপাশি শাখা সংগঠনের রাজ্য নেতাদের জন্যও আলাদা কটেজ বুকিং হচ্ছে। একই সঙ্গে ভিলেজের স্পা, সুইমিং পুল ও বিলাসিতার যাবতীয় উপকরণও বুকিং করা হচ্ছে শিবিরে আসা নেতাদের জন্য।
প্রশিক্ষণ শিবিরের স্থান নির্বাচনের প্রস্তাবটি এদিনের বৈঠকে ওঠার পর আদি বিজেপি নেতাদের একাংশ বিরোধিতা করেন। বলেন, গরিব মানুষের কাছে যাওয়ার জন্য যে প্রশিক্ষণ শিবির হবে সেখানে দু’কোটি টাকা খরচ করে এত বিলাসিতা করা আদৌ যুক্তিযুক্ত নয়। বিশেষ করে গরিব মানুষের জন্য কর্মসূচি চূড়ান্ত করতে গিয়ে যদি বৈভবের সমুদ্রে গা ভাসিয়ে দেওয়া হয় তাহলে জনমানসে বিজেপি নিয়ে ভুল বার্তা যাবে। আর এমন প্রশিক্ষণ শিবির বহু জেলাতেই আয়োজন করা হয়ে থাকে। সেখানে মাত্র দেড়শো লোকের জন্য দু’কোটি টাকা ব্যয় করে এই ‘পিকনিক’ পার্টির পক্ষে যথেষ্ট ক্ষতির কারণ হবে।
এমনিতেই বিজেপিকে বাংলার মানুষ বড়লোকের পার্টি বলে মনে করে, তার উপর যদি এমন ‘সেভেন স্টার’ রিসর্টে ফূর্তিতে ডুব দিয়ে চিন্তন বৈঠক করা হয় তাহলে আগামী লোকসভা ভোটে তার প্রভাব পড়বে। কিন্তু রাজ্যে দলের সহ-পর্যবেক্ষক অমিত মালব্যরা কার্যত বৈদিক ভিলেজেই তিনদিনের ‘পিকনিক’ করার প্রস্তাবেই অনড় থাকেন।