অব্যাহত মোদী সরকারের বিমাতৃসুলভ আচরণ। বাংলার ভাগ্যে জুটছে কেবলই বঞ্চনা। ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে নিয়ম ভাঙার পরও বিজেপি শাসিত ‘ডবল ইঞ্জিন’ রাজ্যগুলির বরাদ্দ বহাল থাকছে। পাশাপাশিই সব শর্ত পূরণ করার পরও বাংলাকে এই প্রকল্পে টাকা দেওয়া হচ্ছে না। এই প্রেক্ষিতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রাজ্যের পঞ্চায়েতমন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার। ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে স্বছতা বজায় রাখার উদ্দেশ্যে জেলাভিত্তিক ওম্বুডসম্যান নিয়োগ করতে হবে, বলছে কেন্দ্রের আইনে। প্রতি জেলায় সর্বাধিক ৩ জন নিযুক্ত করতে পারে রাজ্যগুলি। স্বচ্ছতা বজায় রেখে একশো দিনের কাজের প্রকল্প চালানোর ক্ষেত্রে এই বিশেষ আধিকারিকদের ভূমিকা ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, প্রকল্পের কর্মী বা সংশ্লিষ্ট কেউ অভিযোগ জানালে, আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার বিশেষ ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে তাঁকে। এর মধ্যে রয়েছে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষমতাও। কিন্তু এই নিয়োগ নিয়ে অধিকাংশ রাজ্যই উদাসীন ছিল। ফলস্বরূপ, অন্তত ৮০ শতাংশ জেলায় এই নিয়ম বলবৎ করতে না পারলে ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে সংশ্লিষ্ট রাজ্যে একশো দিনের প্রকল্পের বরাদ্দ বন্ধ করে দেওয়া হবে, গত ফেব্রুয়ারি মাসে জানিয়ে দেন কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়নমন্ত্রী গিরিরাজ সিংহ।
তবে দেখা যাচ্ছের, বিজেপিশাসিত উত্তরপ্রদেশ, গুজরাত, গোয়া, অরুণাচল প্রদেশ সহ একাধিক রাজ্যের অনেক জেলায় এখনও ওই নিয়োগ প্রক্রিয়া হয়নি। এমনটাই বলছে গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের পরিসংখ্যান। উত্তরপ্রদেশের ৭৫টি জেলার মধ্যে মাত্র ৩২টিতে, গুজরাতে ৩৩টির মধ্যে মাত্র ৬টিতে এই কাজ শেষ হয়েছে। গোয়া ও অরুণাচল প্রদেশের কোনও জেলায় এই নিয়োগ হয়নি। কিন্তু এর জন্য কেন্দ্রীয় বরাদ্দ মোটেই বন্ধ হয়নি। বরং এসব রাজ্যে বকেয়া অর্থের পরিমাণ খুব কম। উত্তরপ্রদেশ, গোয়া, অরুণাচল, গুজরাতের ক্ষেত্রে এই পরিমাণ যথাক্রমে ৮.২৫, ৩.২৩, ৮.৬২ ও ১৮.২৫ শতাংশ। এদিকে বাংলায় জেলা ভাগের আগে মন্ত্রকের রিপোর্ট বলছে, ২৩টি জেলার মধ্যে ২২টিতে সমাপ্ত হয়েছে ওম্বুডসম্যান নিয়োগ প্রক্রিয়া। আগস্ট মাসে অতিরিক্ত নিয়োগের জন্য নতুন করে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর। তারপরও দেশের মধ্যে একমাত্র বাংলাই চলতি অর্থবর্ষে একশো দিনের কাজে এক পয়সা পায়নি। মন্ত্রকের রিপোর্ট অনুযায়ী, চলতি এপ্রিল থেকে এখনও পর্যন্ত ‘নারেগা’ প্রকল্পে সরাসরি উপভোক্তাদের অ্যাকাউন্টে চলে আসার কথা ৭৬২ কোটি ১৯ লক্ষ টাকা। কিন্তু পুরো টাকাটাই এখনও দেখানো হচ্ছে বকেয়া হিসেবে। ফলত বাংলার কপাল বরাদ্দ জুটছে না কিছুই।