একুশের ভোটে ভরাডুবির পর থেকেই বঙ্গ বিজেপির অন্দরে মুষল পর্ব চলছে! সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ থেকে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ত্যাগ— নানা ভাবে দলের একাংশের বিরুদ্ধে সরব হতে দেখা গিয়েছে দলেরই অন্য অংশকে। একের পর এক পুরভোট, উপনির্বাচনে হারের পর সেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব আরও বড় চেহারা নিয়েছে। এবার যেমন তৃণমূলকে আক্রমণ করতে গিয়ে নিজের দলের রাজ্য সভাপতিকেই নিশানা করে ফেলেছেন দিলীপ ঘোষ। সে কারণে সর্বভারতীয় সহ-সভাপতির উপরে ক্ষুব্ধ বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।
রবিবার রাজ্যের বিভিন্ন বিষয়ে সিবিআই তদন্ত নিয়ে যে মন্তব্য করেছেন দিলীপ, তা সরাসরি কেন্দ্রীয় সরকারের ওপর অনাস্থারই শামিল। বস্তুত, সিবিআই সরাসরি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘পার্সোনেল’ (কর্মিবর্গ) মন্ত্রকের আওতাভুক্ত। দিলীপ সিবিআইকে তুলোধনা করার পাশাপাশি এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-এর প্রশংসা করেছেন। যে সংস্থা কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রকের অধীন। পুরো বিষয়টিই বিজেপির শীর্ষনেতৃত্ব তথা কেন্দ্রীয় সরকারকে অস্বস্তিতে ফেলেছে। তার পরেই কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব কড়া পদক্ষেপের মনোভাব দেখিয়েছেন। ইতিমধ্যেই রবিবার দিলীপ ঠিক কী কী বলেছিলেন, তা রাজ্য নেতৃত্বের কাছে জানতে চেয়েছেন দলের শীর্ষনেতৃত্ব। দিলীপের বক্তব্যের ভিডিয়ো ছাড়াও তাঁর বক্তব্যের হিন্দি ও ইংরেজি অনুবাদও চাওয়া হয়েছে বলে সোমবার বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে।
তবে দিলীপ তার পরেও থামেননি। সোমবারেও তিনি তাঁর বক্তব্যে অনড় থেকেছেন। আরও কয়েক ধাপ এগিয়ে নিজের রবিবারের বক্তব্যের সমর্থনে কথা বলেছেন। ব্যাখ্যাও দিয়েছেন। সূত্রের খবর, সেই বক্তব্য নিয়েও খোঁজখবর শুরু করেছেন দলের শীর্ষনেতৃত্ব। দিলীপ কী বলেছেন, তা নিয়ে রিপোর্ট চেয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তার পাশাপাশি দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডাও আলাদা করে রিপোর্ট চেয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। রাজ্য দলের কাছে একই বার্তা পাঠিয়েছেন সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) বিএল সন্তোষও। এদিকে রবিবার দিলীপ যে মন্তব্য করেছেন তার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে সোমবার আবার একই কথা বলেছেন। তবে বিজেপি নেতৃত্বের অসন্তোষ বেশি করে রবিবারের মন্তব্যের জন্য। কারণ, দিলীপ ওই কথাগুলি কলকাতায় বলেছেন কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রকের একটি অনুষ্ঠানে। তাই শুধু দল নয়, আদতে দিলীপ কেন্দ্রীয় সরকারকেও অস্বস্তিতে ফেলেছেন বলে মনে করছে গেরুয়া শিবির।