প্রতিশ্রুতি রাখল রাজ্য সরকার। এবার দেউচা-পাঁচামি প্রকল্পে নিয়োগপত্র পেলেন আরও ৭৮ জন জমিদাতা। শনিবার থেকেই তাঁরা জুনিয়র কনস্টেবল পদে কাজে যোগ দেন। শনিবার সিউড়ির ইন্ডোর স্টেডিয়ামে আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁদের হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেন প্রশাসনিক কর্তারা। ব্যারাকপুরের লাটবাগানে চার মাসের প্রশিক্ষণের জন্য রবিবার তাঁরা রওনা দিলেন। একইসঙ্গে কয়লা প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ের সম্মতিপত্র নেওয়া সেই এলাকায় সমীক্ষা খননের কাজ শুরু হয়েছে বলে জানান জেলাশাসক বিধান রায়। দেউচা-পাঁচামির প্রস্তাবিত কয়লা প্রকল্পে জমিদাতাদের মনোনীত প্রার্থীকে জুনিয়র কনস্টেবল পদে নিয়োগপত্র দেবে সরকার, গত বছরের ১১ই নভেম্বর বিধানসভায় দাঁড়িয়ে এমনই ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপরই এলাকার আদিবাসীদের নিয়ে মহাসভা গঠন করে বহিরাগতরা উসকানি দিতে শুরু করে। আদিবাসীদের বিভ্রান্ত করে এলাকায় গিয়ে মিছিল করে বিরোধী দলগুলিও। প্রশাসনিক কর্তাদের এলাকায় গিয়ে পাট্টা বিলি করতে বাধা দেয় মহাসভা। কিন্তু গত মাসে প্রথম পর্যায়ের ২৭৫ জনের হাতে কাজে যোগদানের নিয়োগপত্র তুলে দিয়ে তার জবাব দিয়েছিল প্রশাসন।
প্রসঙ্গত, এদিন দ্বিতীয় পর্যায়ে সিউড়ি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে আনুষ্ঠানিকভাবে ৭৮ জনের হাতে নিয়োগপত্র তুলে দিলেন মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ, জেলা সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরী, লাভপুরের বিধায়ক অভিজিৎ সিংহ, জেলাশাসক বিধান রায়, পুলিশ সুপার নগেন্দ্রনাথ ত্রিপাঠী-সহ প্রশাসনিক কর্তারা। বিধানসভার উপাধ্যক্ষ আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কখনও মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দেন না। যারা বলত আগে চাকরি দিয়ে দেখান, তারা এবার দেখুন। মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন আগে চাকরি, পরে খনন। সেই কথা তিনি রেখেছেন। এলাকার যুবক-যুবতীদের প্রথম পর্যায়ের পর দ্বিতীয় পর্যায়েও চাকরি দিলেন তিনি।” মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ বলেন, “বহিরাগতরা প্রকল্পকে নষ্ট করার মতলবে হাজির হয়। জেলার ভাল-মন্দ এখন আপনাদের হাতে। এলাকার ভবিষ্যৎ আপনারা গড়ুন। এলাকায় গিয়ে বাংলা কী গতিতে এগোচ্ছে, সবাইকে তা জানান। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ফের বাংলাকে দেশের এক নম্বর স্থানে পৌঁছে দেবেন।” জেলাশাসক বিধান রায় বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার পরে নোটিফিকেশন হতেই আমরা এলাকার বাসিন্দাদের নিয়ে সিউড়িতে আলোচনা করি। গ্রামে গিয়ে, মহল্লায় বসে প্যাকেজ নিয়ে বিস্তর আলোচনা হয়। সারা জেলায় পুলিশ ও প্রশাসন একটা টিম হিসাবে কাজ করেছি। প্রস্তাবিত কয়লাখনি এলাকার প্রথম পর্যায়ে দেওয়ানগঞ্জ-হরিণশিঙা এলাকা থেকে এই চাকরি প্রদান।” তিনি জানান, দ্বিতীয় পর্যায় দেউচা-পাঁচামি এলাকায় ইতিমধ্যে খনন সমীক্ষা থেকে জমি গ্রহণের কাজ চলছে। পুলিশ সুপার নগেন্দ্রনাথ ত্রিপাঠী নবনিযুক্ত কনস্টেবলদের উদ্দেশে বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর মানবিকতায় আপনারা চাকরি পেলেন। বর্তমানে সরকারি চাকরি পাওয়া এত সহজ কাজ নয়। বরং পুজোর আগেই একটা বড় উপহার হিসাবে মুখ্যমন্ত্রী আপনাদের হাতে নিয়োগপত্র তুলে দিলেন।” দুটি পর্যায়ে ৪০০ চাকরিপ্রার্থীর নাম থাকলেও ৩৫৩ জনকে নিয়োগপত্র দেওয়া হয়। এবার ফের তৃতীয় দফার তালিকা প্রস্তুতি চলছে। প্রশাসন সূত্র অনুযায়ী জানা গিয়েছে তেমনটাই।