আবিস্কার হয়েছে মাছের ভ্যাকসিন। রাজ্যে প্রথম প্রজননক্ষম মাছের টিকাকরণ এগরা-১ নম্বর ব্লকের তিনটি মাছের হ্যাচারীতে, উৎপাদিত হবে নিরোগ স্বাস্থ্যকর মাছ। মাছের টিকাকরণ কর্মকাণ্ডকে ঘিরে এলাকায় মাছ চাষিদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ দেখা হয়েছে। এখানে নৈহাটি, বাঁকুড়া–সহ অন্যান্য জেলার উৎসাহী মাছের হ্যাচারি মালিকরাও উপস্থিত ছিলেন। এই রাজ্যে প্রথম মাছের টিকা বা ভ্যাকসিন প্রয়োগ করে তাক লাগিয়ে দিল রাজ্যের মৎস্য দফতর। তার জেরে এগরা–১ নম্বর ব্লকের তিনটি মাছের হ্যাচারিতে উৎপাদিত হবে নিরোগ স্বাস্থ্যকর মাছ। মাছ চাষের ক্ষেত্রে একটা দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করল এগরা–১ নম্বর ব্লক মৎস্য বিভাগ। যদিও এই টিকা তৈরি হয়েছে ভুবনেশ্বরে। মৎস্য দফতর সূত্রে খবর, অকাল বৃষ্টি কিংবা একটানা চড়া রোদ— ঋতুর এই খামকেয়ালিপনায় এবং পরিবেশ দূষণের জেরে মাছের প্রজননে গভীর প্রভাব পড়ছে। তার জেরে হ্যাচারিতে মাছের প্রজনন ও পোনা উৎপাদন বাধা পাচ্ছে। এমনকী প্রজননের অনুকূল পরিবেশ না পেয়ে হ্যাচারিতে মাছ কৃত্রিম প্রজননে সাড়া দিচ্ছে না। পেটে ডিম আসলেও ডিম ছাড়ছে না। মাছ সহজেই রোগে আক্রান্ত হচ্ছে এবং মৃত্যু হার বেড়ে যাচ্ছে। যার জন্য উৎপাদন কম হচ্ছে এবং চাষিদের আয় কমে যাচ্ছে। এই সমস্যার সমাধানে দেশের মৎস্য বিজ্ঞানীরা তৈরি করেছেন অভিনব মাছের টিকা বা ভ্যাকসিন। নাম দেওয়া হয়েছে “সিফা-ব্রুড-ভ্যাক”।
প্রসঙ্গত, স্বাস্থ্যকর মাছ এবং রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন মাছের চারাপোনা তৈরির মাধ্যমে, মাছের উৎপাদন অনেকাংশে বৃদ্ধি করতে কেন্দ্রীয় মিঠাজল মৎস্য গবেষনা কেন্দ্র এই টিকা আবিষ্কার করেছে। এই গবেষণাকেন্দ্রটি ভুবনেশ্বরে। আর এই টিকার নাম ‘সিফা–ব্রুড–ভ্যাক’। এই টিকার প্রথম প্রয়োগ শুরু হল পূর্ব মেদিনীপুর জেলার এগরা–১ নম্বর ব্লকের তিনটি মাছের হ্যাচারিতে। এই টিকা প্রয়োগ করলে মাছের ডিমের থেকে যে ডিমপোনা ও ধানীপোনা হয় তার বাঁচার হার বেশি। ব্রড স্পেকট্রামে রোগ হয় না। ফলে স্বাস্থ্যকর মাছের ফলন বেশি হয়। মৎস্য বিজ্ঞানী ড. মৃনাল সামন্ত এবং এগরা ব্লকের মৎস্যচাষ সম্প্রসারণ আধিকারিক সুমন কুমার সাহুর তত্ত্বাবধানে এগরার সাতখণ্ড গ্রামের উত্তম মিদ্যার বাটা, সরপুঁটি মাছ হ্যাচারিতে, বাগমারী গ্রামের কান্তু গিরির মাগুর শিঙি মাছের হ্যাচারিতে এবং অরুয়া গ্রামের জগন্নাথ আইচের রুই, কাতলা মাছের হ্যাচারিতে প্রজননক্ষম মাছের টিকাকরণ করা হয়।