বিজ্ঞানের আঙিনায় ফের উজ্জ্বল বাংলার নাম। আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু, মেঘনাথ সাহা, প্রফুল্লচন্দ্র রায় ও সত্যেন্দ্রনাথ বসু প্রমুখের আলো করা দীর্ঘ তালিকায় নতুন সংযোজন শ্রেয়সী আচার্য। আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায় করে নিয়েছে
শিলিগুড়ি পৌরনিগমের ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের ভারতনগরের এই বাসিন্দার পদার্থবিদ্যার এক গবেষণা পত্র। বিশ্বের আরও চার প্রতিভাবান গবেষকের সঙ্গে জুড়ে গেছে শ্রেয়সীর নাম। শ্রেয়সীকে তাঁর উল্লেখযোগ্য গবেষণা পত্রের জন্য বিশ্বের অন্যতম বড় বিজ্ঞানীদের সংগঠন ‘ইউরোপিয়ান অর্গানাইজেশন ফর নিউক্লিয়ার রিসার্চ’ বা সার্ন-এর তরফে এলিস থিসিস অ্যাওয়ার্ডে সম্মানিত করা হয়েছে। আর এই খবরে এখন স্বাভাবিকভাবেই আনন্দের আবহ আচার্য পরিবারে।
উল্লেখ্য, ব্যাং থিয়োরি বা ঈশ্বর কণার সঙ্গে নাম জুড়েছিল সত্যেন্দ্রনাথ বসুর। এবার সেই ঈশ্বর কণার সঙ্গে জুড়েছে শ্রেয়সীর নাম। মূলত, প্রোটন কণার সংঘর্ষের পর বিগ ব্যাংয়ের পর মূহূর্তে উৎপত্তি হওয়া কণার উপর লেখা হয় ওই থিসিস। গত বছরের শেষে বিগ ব্যাংয়ের উপর থিসিস বা নিজের গবেষণাপত্র লেখেন শ্রেয়সী। আর তাতেই বাজিমাত করে তিনি। পুরস্কার পেয়ে যারপরনাই আপ্লুত শ্রেয়সী। এই কৃতী গবেষক জানান, “আমি সত্যিই ভাবতে পারিনি এত বড় স্বীকৃতি পাব। আমার বাবা মা তো অবশ্যই, সঙ্গে আমার প্রত্যেক অধ্যাপক ও শুভানুধ্যায়ীদের এর পিছনে অবদান রয়েছে।”
উল্লেখ্য, শ্রেয়সী ভারত সার্নয়ের অ্যাসোসিয়েট সদস্য। সেই সুবাদেই সার্নে গবেষণা করার সুযোগ পান তিনি। শিলিগুড়িতেই বিজ্ঞান নিয়ে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন শ্রেয়সী। এরপর যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থবিদ্যা নিয়ে পড়াশোনা তাঁর। সেখান থেকেই ভাবা অ্যাটমিক রিসার্চ সেন্টারে গবেষক হিসেবে যোগ দেন। ২০২১ সাল থেকে সার্নয়ে কাজ শুরু করেন তিনি। বর্তমানে ফ্রান্সে এলিস গবেষকদের সঙ্গে গবেষণার কাজ করছেন শ্রেয়সী। গত সপ্তাহেই সার্নে পালিত হয়ে এলিস সপ্তাহ। আর সেখানেই শ্রেয়সীর গবেষণাপত্রকে শ্রেষ্ঠ বলে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। কন্যার এমন সাফল্যে গর্বিত বাবা পরিমল আচার্য। “খবরটা প্রথম শোনার পর আমি কিছুক্ষণ খুশিতে ভাষা হারিয়ে ফেলেছিলাম”, জানিয়েছেন পরিমলবাবু।