কেটে গেছে নয় নয়টি বছর। এখনও সারা বাংলা জুড়ে উজ্জ্বল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মস্তিষ্কপ্রসূত কন্যাশ্রী প্রকল্প। গতকাল, অর্থাৎ কলকাতার নজরুল মঞ্চে পালন হল নবম কন্যাশ্রী দিবসের অনুষ্ঠান। বিগত ২০১৩ সালে মূলত বাল্যবিবাহ ও স্কুলছুটের সংখ্যা কমাতে কন্যাশ্রী প্রকল্প চালু হয়েছিল। এই নয় বছরে ৮০ লক্ষ স্কুলছাত্রীকে এই প্রকল্পের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। করোনা অতিমারীলের কঠিন সময়েও উপভোক্তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে নির্দিষ্ট সময়ে অনুদান নিশ্চিত করা হয়েছে। বিগত ন’বছরে কন্যাশ্রী প্রকল্পের মাধ্যমে স্কুলছাত্রীদের মোট ১২ হাজার কোটি টাকা দিয়েছে রাজ্য। আজ অনুষ্ঠানে এই তথ্য তুলে ধরেন নারী, শিশু এবং সমাজকল্যাণ দপ্তরের মন্ত্রী শশী পাঁজা। এদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, সমাজকল্যাণ দফতরের প্রধান সচিব সঙ্ঘমিত্রা ঘোষ, রাজ্যে ইউনিসেফের প্রধান মহম্মদ মহিউদ্দিন, মহিলা কমিশনের চেয়ারম্যান লীনা গঙ্গোপাধ্যায়, শিশু সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন অনন্যা চক্রবর্তী চ্যাটার্জি প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, কন্যাশ্রী (কে ১ এবং কে ২) প্রকল্পের মাধ্যমে ১৩ থেকে ১৮ বছর পর্যন্ত স্কুলছাত্রীদের বিশেষ ভাতা দেয় রাজ্য সরকার। বাৎসরিক ভাতার পাশাপাশি ১৮ বছর পর্যন্ত স্কুলে পড়াশোনা সম্পন্ন করলে দেওয়া হয় এককালীন ২৫ হাজার টাকা। ২০১৩ সালে ৫০০ টাকা বাৎসরিক ভাতা দিয়ে শুরু হয় এই প্রকল্প। ২০১৭-১৮ সালে এর অঙ্ক বেড়ে হয় ৭৫০ টাকা। ২০২০ সালে ফের বাড়িয়ে করা হয় এক হাজার টাকা। মোট ১৮,১২৩টি স্কুলের ৮০ লক্ষ ছাত্রী এই প্রকল্পের মাধ্যমে এখনও পর্যন্ত ১২,০০০ কোটি টাকার ভাতা পেয়েছে। রবিবার বিভিন্ন জেলার কৃতী ২১ জন কন্যাশ্রীকে বিশেষভাবে পুরস্কৃত হন। প্রত্যেককে একটি করে হাতঘড়ি ও পাঁচ হাজার টাকা তুলে দেওয়া হয়। এছাড়া কন্যাশ্রীদের মাধ্যমে সাইবার নিরাপত্তা সংক্রান্ত সচেতনতা গড়ে তোলারও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে মেয়েদের মধ্যে । রবিবার একটি কিউআর কোডও চালু করে সংশ্লিষ্ট দফতর। ওই কোড স্ক্যান করলেই ঢোকা যাবে দফতরের ওয়েবসাইটে। সেখানে শিশু সুরক্ষা, সঞ্চয়ের উপায়, মেয়েদের সুস্বাস্থ্য সহ বিভিন্ন বিষয়ে শিক্ষামূলক তথ্য ও ভিডিও ক্লিপিং দেখতে পাওয়া যাবে। যাতে কন্যাশ্রী উপভোক্তাদের মধ্যে সামাজিক বিভিন্ন বিষয়ে সচেতনতা গড়ে তোলা যায়, সেই উদ্দেশ্যে আজ কয়েকজনের হাতে ‘কিশোরী কিট’ তুলে দেওয়া হয়। জানা গিয়েছে, এই মুহূর্তে আট হাজার কন্যাশ্রী ক্লাব গড়ে উঠেছে সারা বাংলায়।
