ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের ইতিহাসে ঔপনিবেশিক ব্রিটিশদের মনে ত্রাস সৃষ্টি করে রেখেছিলেন বাংলার বিপ্লবীরা। বাঙালি বিপ্লবীদের আন্দোলন, কৌশল ও বলিদানের ইতিহাস ভারতের অন্যান্য রাজ্যের বিপ্লবীদের মতোই স্বর্ণোজ্জ্বল। ১৯৪৭ সালে ভারতের স্বাধীনতা লাভের পর ২০২২-এ আজ দেশ ৭৫ তম স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে দাঁড়িয়ে। এই সন্ধিক্ষণে উপস্থিত হয়ে স্বাধীনতা দিবস উদযাপনে উদ্যোগী হয়েছে সমস্ত স্কুল। এমনিই বালুরঘাটের এক স্কুলের ভাঁড়ার ঘর থেকে উদ্ধার হল একনলা রাইফেল। যে রাইফেল একটা সময়ে তাক করা হতো ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে। অনুশীলন সমিতি, যুগান্তর গোষ্ঠীর গোপন বৈঠক থেকে সশস্ত্র স্বাধীনতা সংগ্রাম—বালুরঘাটের প্রাচ্যভারতী ছিল স্বদেশী আন্দোলনের অন্যতম আস্তানা। বিপ্লবীদের গোপন ডেরা। শুক্রবার সেই স্কুলেরই স্টোর রুম পরিষ্কার করতে গিয়ে উদ্ধার হল বেশ কিছু অস্ত্র। ১৯৪৭ সালের ১৫ অগস্টের অনেক আগেই বালুরঘাট শহরে টেনে নামিয়ে দেওয়া হয়েছিল ব্রিটিশের ইউনিয়ন জ্যাক। নাটকের শহরের আকাশে বিপ্লবীরা উড়িয়ে দিয়েছিলেন তেরঙা পতাকা।
গোটা দেশ যখন ৭৫তম স্বাধীনতা দিবস উদযাপনে মেতেছে সেই ঐতিহাসিক সন্ধিক্ষণে বালুরঘাটে উদ্ধার হল বিপ্লবীদের ব্যবহার করা অস্ত্র। প্রাচ্যভারতীর সহ শিক্ষক রাজীব দাস জানিয়েছেন, স্কুলের স্টোর রুম পরিষ্কার করতে গিয়ে অস্ত্রগুলি উদ্ধার হয়। সেগুলি নিয়ে স্কুলেই একটি সংগ্রহশালা করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। ইতিহাস গবেষক সমিৎ ঘোষ বলেছেন, বালুরঘাটের মানুষের জন্য উদ্ধার হওয়া অস্ত্রগুলি খুবই গর্বের। আগামী প্রজন্ম জানতে পারবে, স্বাধীনতা আন্দোলনে স্বদেশী আন্দোলনের বিপ্লবীদের গর্বের ইতিহাসের কথা। স্বাধীনতা আন্দোলনে সশস্ত্র সংগ্রাম একটা বড় ইতিহাস। পাঞ্জাব প্রদেশে ভগৎ সিংদের লড়াই থেকে মাস্টারদা সূর্য সেনের নেতৃত্বে চট্টগ্রামের যুব বিদ্রোহ কিংবা কলকাতার বুকে বিনয়-বাদল-দীনেশের অকুতোভয় লড়াই—স্বদেশী আন্দোলনের মাইলফলক। তেমনই বিভিন্ন ছোট শহর, গ্রাম, মফস্বলে অনুশীলন সমিতি কিংবা যুগান্তর গোষ্ঠীর ছোট ছোট ডেরাও বড় লড়াইয়ে অনুঘটকের কাজ করেছিল। বালুরঘাটও তেমনই।