গরু পাচার মামলায় গ্রেফতার হওয়া অনুব্রত মণ্ডলকে ২০ আগষ্ট পর্যন্ত সিবিআই হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আসানসোলের বিশেষ আদালত। বোলপুরের বাড়ি থেকে বীরভূমের দাপুটে তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলকে গ্রেফতার করে সিবিআই। দুর্গাপুরে ও আসানসোলে আদালতের পর্ব চুকিয়ে গতকাল গভীর রাতে, পৌনে তিনটে নাগাদ অনুব্রত মণ্ডলকে নিজাম প্যালেসে নিয়ে আসা হয়। জানা গেছিল, আজ, শুক্রবার বেলা ১১টা থেকেই শুরু হবে জেরা। তবে রাতে শ্বাসকষ্ট হওয়ায়, এখন তাঁকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছে কম্যান্ড হাসপাতালে। গরুপাচার মামলায় ধৃত তৃণমূল নেতা রাতে নিজাম প্যালেসের ঘরেই ঘুমিয়েছেন, ক্যাম্পখাটে। সূত্রের খবর, মাথার কাছে রাখা ছিল অক্সিজেন সিলিন্ডার। নিয়মমাফিক ওষুধও খান অনুব্রত। ডায়েট মেনে অল্প কিছু খাবারও দেওয়া হয় তাঁকে। সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার রাতে শ্বাসকষ্টের সমস্যায় ভুগেছিলেন অনুব্রত মণ্ডল। এমনকী তাঁকে রাতের বেলা অক্সিজেন দিতে হয় বলেও জানা গিয়েছে। এখন স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে আলিপুরের হাসপাতালে। এই নিয়েও অবশ্য আদালতের বিশেষ নির্দেশ রয়েছে। অনুব্রত গতকালই আদালতে জানিয়েছিলেন, তিনি খুবই অসুস্থ। শ্বাসকষ্ট আছে, হার্টে ব্লকেজ রয়েছে। বুকে ব্যথা। কিডনির দোষও আছে, তাই পা ফুলে যাচ্ছে। ফিসচুলা আছে। হাই প্রেশারের রোগী তিনি।
এসব শুনে, সিবিআই হেফাজতে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে কলকাতার কম্যান্ড হাসপাতালে ভর্তি করানোর নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। আগামী ২০ অগস্ট ফের আদালতে তোলা হবে অনুব্রতকে। তার আগে পর্যন্ত সিবিআই হেফাজতেই থাকবেন তিনি। এই সময়ে প্রতি ৪৮ ঘণ্টা অন্তর অনুব্রতের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে হবে। এ জন্য তিন চিকিৎসকের একটি দলও গড়ে দিয়েছেন আসানসোলের বিশেষ আদালতের বিচারক। সেই দলে এক জন মেডিসিনের ডাক্তার, এক জন কার্ডিওলজিস্ট এবং এক জন সার্জেন রয়েছেন। একমাত্র তাঁদের পরামর্শেই হাসপাতালে ভর্তি করানো যাবে অনুব্রতকে। কাল থেকেই বিশেষ কথাবার্তা বলছেন না অনুব্রত। গতকাল সন্ধেয় আসানসোলের বিশেষ আদালতে তাঁর ১০ দিন সিবিআই হেফাজত ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই মুষড়ে পড়েছিলেন তিনি। কলকাতায় আসার সময়ে সাড়ে সাত ঘণ্টার দীর্ঘ পথ ছিলেন চুপচাপ। একসময় চোখে জলও দেখা যায় বিমর্ষ অনুব্রতর। শেষের দিকে গাড়িতেই ঘুমিয়ে পড়েন তিনি। শেষমেশ রাত পৌনে তিনটে নাগাদ ঢোকেন নিজাম প্যালেসে। এখন হাসপাতালে স্বাস্থ্যপরীক্ষার পরে কী বলেন চিকিৎসকরা, সেদিকেই তাকিয়ে সকলে।