কিছুদিন আগেই কলকাতার এক শপিং মল থেকে ৫০ লক্ষ টাকা-সহ ঝাড়খণ্ডের আইনজীবী রাজীব কুমারকে গ্রেফতার করেছে হেয়ার স্ট্রিট থানার পুলিশ। এবার তাঁর ৭০ কোটি টাকার সম্পত্তির হদিশ পেল কলকাতা পুলিশ। এছাড়াও অন্তত ২৪টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সন্ধান মিলেছে। ওই অ্যাকাউন্টগুলির মধ্যে কয়েকটি রয়েছে আইনজীবীর কর্মচারীদের নামে। বুধবার আইনজীবী রাজীব কুমারকে ব্যাঙ্কশাল আদালতে তোলা হয়। তাঁকে ১৪ দিনের জন্য জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক।
জানা গিয়েছে, ঝাড়খণ্ড ও কলকাতার এক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে রাঁচি আদালতে জনস্বার্থ মামলা করেন ওই আইনজীবী। এর পর মামলার নিষ্পত্তি করার নাম করে টাকা চান ‘পিআইএল ম্যান’ নামে পরিচিত রাজীব কুমার। পার্ক সার্কাসের কাছে একটি শপিং মল থেকে ৫০ লক্ষ টাকা-সহ গ্রেফতার হন তিনি। তাঁর সম্পত্তির সন্ধানে দিল্লী, নয়ডা ও ঝাড়খণ্ডে হানা দেন লালবাজারের গোয়েন্দারা। ঝাড়খণ্ডে ফ্ল্যাট, সাত একর জমি-সহ প্রায় কুড়ি কোটি টাকার সম্পত্তি মেলে। দিল্লী ও নয়ডায় হানা দিয়ে চারটি ফ্ল্যাট ও অফিসের সন্ধান মেলে, যার মূল্য অন্তত ৫০ কোটি টাকা।
যে ২৪টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সন্ধান মিলেছে, সেগুলির মধ্যে কয়েকটি তাঁর নিজের, বাকিগুলি স্ত্রী, ছেলে ও ভাই এবং ভাইয়ের পরিবারের লোকেদের নামে। ন’জন কর্মচারী রয়েছে আইনজীবীর। তাঁদের নামেও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে রাজীব কুমারই লেনদেন করতেন বলে অভিযোগ। সেগুলিতেও কোটি কোটি টাকার হদিশ মিলেছে। রাজীব কুমারের পরিবারের দাবি, পেশায় সিএ ভাইয়ের সঙ্গে বহু বছর যোগাযোগ নেই তাঁদের। কিন্তু পুলিশের অভিযোগ, রাজীবকে জেরা করে ও তাঁর মোবাইল ঘেঁটে পুলিশ আধিকারিকরা নিশ্চিত যে, ভাই নিজেই দেখাশোনা করতেন দাদার টাকা লেনদেনের বিষয়টি।
আইনজীবীর ভাই অনীশ কুমারের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে ল্যাপটপের সন্ধান মিলেছে। এ ছাড়াও রাজীব কুমারের অফিস থেকেও মিলেছে ল্যাপটপ। সেগুলি খতিয়ে দেখে বাকি নগদ টাকার হদিশ চলছে। তদন্ত করে পুলিশ জেনেছে, কলকাতার অন্তত সাতজন ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে জনস্বার্থ মামলা বা ‘পিআইএল’ করেছেন আইনজীবী। এর মধ্যে তিনজনের কাছ থেকে আইনজীবী আগেই মোটা টাকা তোলা আদায় করেছেন বলে অভিযোগ। ওই তিন ব্যবসায়ীকে পুলিশ শনাক্ত করেছে। তাঁদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।