মাঝখানে বছর পাঁচেক। ফের বিহারে জেডিইউ এবং বিজেপির জোটে ভাঙন। ২০১৭ সালের জুলাই মাসে যে বিরোধী শিবির ছেড়ে নীতীশ কুমার বিজেপির হাত ধরেছিলেন, সব ঠিক থাকলে ফের সেই বিরোধী শিবিরেই ফিরতে চলেছেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী। সম্ভবত নতুন করে মহাগাঁটবন্ধনের সরকার আসতে চলেছে বিহারে। কিন্তু নতুন সরকার গঠিত হলে সেই সমীকরণ কী আদৌ মসৃণ হবে?
এখনও পর্যন্ত যা খবর তাতে বিহারে এনডিএ সরকারের পতন সময়ের অপেক্ষা। ফের ২০১৫ সালের মতো মহাজোটের সরকার আসতে চলেছে প্রতিবেশী রাজ্যে। আরজেডি দফতরে ইতিমধ্যেই সেলিব্রেশন শুরু হয়ে গিয়েছে। আরজেডি প্রতিষ্ঠাতা লালুপ্রসাদ যাদবের মেয়ে মিসা ভারতী ইতিমধ্যেই আরজেডি সমর্থকদের সেলিব্রেশনের ভিডিও টুইট করেছেন। সেই সঙ্গে আরও একটি ইঙ্গিতপূর্ণ টুইট করেছেন লালুর আরেক মেয়ে রোহিণী। তাঁর বক্তব্য, ‘লালু ছাড়া বিহার চলবে, এটা হতেই পারে না’। সরকার গঠনের জন্য সমীকরণও ঠিক করে ফেলেছে বিরোধীরা। যাতে মুখ্যমন্ত্রীর পদ থাকবে নীতীশের হাতে। উপমুখ্যমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক থাকবে আরজেডির হাতে। এবং কংগ্রেসের হাতে থাকবে স্পিকার পদ।
এমনিতে ২০২০ বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি-জেডিইউ জোট বড় সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। ২৪৩ আসনের বিহার বিধানসভায় শাসক শিবির জেতে ১২৫টি আসন। এর মধ্যে বিজেপি জিতেছিল ৭৪ আসন। নীতীশ কুমারের জনতা দল (সংযুক্ত) জিতেছিল ৪৩ আসন। হিন্দুস্তান আওয়াম মোর্চা এবং বিকাশশীল ইনসান পার্টি মোট আটটি আসন জেতে। পরে অবশ্য বিকাশশীল পার্টির ৩ বিধায়ক বিজেপিতে যোগ দেয়। অন্যদিকে, বিরোধীদের মধ্যে আরজেডি ৭৫টি আসন জেতে। কংগ্রেস জেতে ১৯টি আসনে। বাম দলগুলির দখলে যায় ১৬টি আসন। পরে আসাদউদ্দিন ওয়েইসির দলের ৪ বিধায়ক আরজেডিতে যোগ দিয়েছেন। ফলে আরজেডির আসন সংখ্যা হয় ৭৯।
এবার নীতীশ যদি বিরোধী শিবিরে যোগ দেন তাহলে আরজেডির ৭৯ এবং জেডিইউ-এর ৪৩ মিলিয়ে ১১২ বিধায়ক এমনিই হয়। এটিই বিহার বিধানসভার ম্যাজিক ফিগার। তার সঙ্গে কংগ্রেসের ১৯ এবং বামেদের ১৬টি আসন যোগ হলে মোট আসন গিয়ে দাঁড়ায় ১৫৭-তে। জিতেন রাম মাঝির হিন্দুস্তান আওয়াম মোর্চা বেশ কিছুদিন ধরেই বিজেপির বিরোধিতা করে আসছে। নীতীশ বিজেপির সঙ্গ ছাড়ার অর্থ হিন্দুস্তান আওয়াম মোর্চাও নীতীশের পিছু পিছু আরজেডির সঙ্গে হাত মেলাবে। সেক্ষেত্রে বিহারের নতুন সরকার আরও শক্তিশালী হবে।