ঘোর উদ্বেগে দেশবাসী। আরোগ্য সেতু অ্যাপ বন্ধ করে দিল মোদী সরকার। করোনা সংক্রমণের দরুণ লকডাউনকালীন সময়ে মোদী সরকার আরোগ্য সেতু অ্যাপের ব্যবহার বাধ্যতামূলক বলে ঘোষণা করে। এরপর সংক্রমণ স্তিমিত হতেই বিকল হয়ে পড়ল অ্যাপটি। এতেই ঘনাচ্ছে আশঙ্কা। কোথায় গেল দেশবাসীর বিপুল পরিমাণ জরুরি তথ্য? আমজনতা নিরাপদ তো? সুরক্ষিত রয়েছে সাধারণ মানুষের ব্যক্তিগত জীবন? উঠছে প্রশ্ন। মোদী সরকার আরোগ্য সেতু অ্যাপ্লিকেশনটির ডেটা অ্যাকসেস ও শেয়ারিং প্রোটোকল বন্ধ করে দিয়েছে। করোনাকালীন সময়ে এই অ্যাপ্লিকেশনটির ব্যবহার আবশ্যক করা হলেও, অতিমারী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসতেই আরোগ্য সেতু অ্যাপটি প্রাসঙ্গিকতা হারায়। ব্যবহার হ্রাস পায়। ইন্টারনেট ফ্রিডম ফাউন্ডেশন নামক একটি সংস্থা মোদী সরকারের কাছে আরটিআইয়ের মাধ্যমে এই অ্যাপটির বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে জানতে চেয়েছিল। জবাবে মোদী সরকার জানিয়েছে, ২০২২ সালের ২০শে মে থেকে আরোগ্য সেতু অ্যাপের ডেটা অ্যাকসেস ও শেয়ারিং প্রোটোকল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সোজা কথায়, আর তথ্য আদানপ্রদান করা যাবে না অ্যাপটির মাধ্যমে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ন্যাশনাল ইনফরমেশন সেন্টার নামক একটি সংস্থা আরোগ্য সেতু অ্যাপ তৈরি করেছিল। ওই সংস্থার মুখপাত্রের কথায়, প্রাসঙ্গিকতা হারানোর কারণে আরোগ্য সেতু অ্যাপের ডেটা অ্যাকসেস ও শেয়ারিং প্রোটোকল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। লকডাউনের সময় যখন আরোগ্য সেতু নিয়ে বিরোধীরা মোদী সরকারকে আক্রমণও করেছিলেন। সে সময় বিরোধীদের অভিযোগ ছিল, ওই অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে দেশের সাধারণ মানুষের উপর নজরদারি চালাচ্ছে মোদী সরকার। কেবল তাই নয়, তথ্য চুরির আশঙ্কাও করেছিল বিরোধীরা। করোনা সংক্রমণ কমতে শুরু করতেই ধীরে ধীরে আরোগ্য সেতুর ব্যবহার কমে, সরকার নিয়ম শিথিল করা শুরু করে। তারপর অ্যাপটিকে অচল করে দেওয়া হল। পাশাপাশি চিন্তা বাড়াচ্ছে অ্যাপ ডাউনলোডের পরিমাণ। অ্যাপ্লিকেশনটির ডেটা অ্যাকসেস ও শেয়ারিং প্রোটোকল মোদী সরকার বন্ধ করে দিয়েছে, আর তখনই আরোগ্য সেতুর অ্যাপের ব্যবহার বৃদ্ধি পাচ্ছে। কো-উইন পোর্টালটি আরোগ্য সেতু সঙ্গে সংযুক্ত। সেই কারণে টিকাকরণের শংসাপত্র পেতে অনেকেই আরোগ্য সেতু অ্যাপটি ডাউনলোড করছেন। চলতি বছরের মার্চ মাসে ১১ লক্ষ মানুষ আরোগ্য সেতু অ্যাপ ডাউনলোড করেন। এপ্রিল ও জুন মাসে নতুন করে আরোগ্য সেতু অ্যাপ ডাউনলোড করেছিলেন প্রায় ৫ লক্ষ মানুষ। স্বাভাবিকভাবেই তাদের ব্যক্তিগত তথ্য নিয়ে দুশ্চিন্তা ক্রমশ ঘনীভূত হচ্ছে।