রাজ্যের অভিযোগেই সিলমোহর দিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। জানিয়ে দিলেন, ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে গত বছর রাজ্যের বরাদ্দ কমিয়েছিল কেন্দ্র। এবছর এখনও পর্যন্ত এই প্রকল্পে রাজ্যকে কানাকড়িও দেয়নি মোদি সরকার। রাজ্যসভায় একথা জানালেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সাধ্বী নিরঞ্জন। রাজ্যসভায় লিখিতভাবে এই তথ্য দিলেন গ্রামোন্নয়নের মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারবার অভিযোগ করেছেন, ১০০ দিনের কাজের বরাদ্দ আটকে রাজ্যকে বঞ্চনা করছে কেন্দ্র। মোদি সরকার টাকা না দেওয়ায় কাজ করেও টাকা পাচ্ছেন না গ্রামের মানুষ।
এদিন তৃণমূল সাংসদ জহর সরকারের করা প্রশ্নের লিখিত জবাব দেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী। তাতে দেখা গিয়েছে, ১০০ দিনের কাজের খাতে ২০২০-২০২১ অর্থবর্ষে বাংলাকে দেওয়া ১১ হাজার ৪৫৪ কোটি টাকার কিছু বেশি। পরের অর্থবর্ষে প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ কমে। ২০২২-২০২৩ অর্থবর্ষে এই বরাদ্দ দাঁড়ায় ৭ হাজার ৫০৭ হাজার কোটি টাকার সামান্য বেশি। অথচ চলতি অর্থবর্ষের ২৮ জুলাই পর্যন্ত বাংলার খাতে এক টাকাও ব্যয় করেনি কেন্দ্র। টাকা দেওয়া হয়নি লাক্ষাদ্বীপকেও। স্বাভাবিকভাবে এই তথ্যকে বাংলাকে বঞ্চনার অভিযোগ আরও জোরদার করবে।
গত ৫ মাস ধরে ১০০ দিনের কাজের টাকা বন্ধ করে রেখেছে কেন্দ্র। ফলে একশো দিনের শ্রমিকদের পেটে টান পড়ছে। সম্প্রতি এই ইস্যুতে একাধিকবার সরব হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনকী, বঞ্চনা নিয়ে দু’দিন প্রতিবাদ কর্মসূচিও পালন করেছে রাজ্য তৃণমূল। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করে প্রাপ্যর দাবি জানিয়ে এসেছেন। তাতেও কাজ হয়নি। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে একান্ত সাক্ষাতে বাংলার প্রাপ্য নিয়ে সরব হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। লিখিতভাবে হিসেব তুলে দেওয়া হয়েছে তাঁর হাতে। তারপরেও কোনও অর্থ দেওয়া হয়নি বাংলাকে।
কেন্দ্রের বঞ্চনা সত্ত্বেও রাজ্যে একশো দিনের কাজ থামিয়ে রাখেনি রাজ্য সরকার। আপাতত সমস্যা মেটাতে কয়েকটি দফতরের বরাদ্দ অর্থের একাংশ নিয়ে তৈরি হচ্ছে ‘ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট ফান্ড’। এই দফতরগুলির মধ্যে রয়েছে পূর্ত, সেচ, কৃষি, পশুপালন এবং পঞ্চায়েত। দফতরগুলির নন-টেকনিক্যাল কাজগুলি করা হবে ১০০ দিনের প্রকল্পের মাধ্যমে। আর এই দফতরগুলির শ্রমিকদের জন্য বরাদ্দ অর্থ দেওয়া হবে ১০০ দিনের কাজের কর্মীদের। এরমধ্যে রাজ্যের দীর্ঘদিনের বঞ্চনার অভিযোগ মেনে নিল কেন্দ্র।