রাশিয়া-ইউক্রেনে যুদ্ধের প্রভাবে আন্তর্জাতিক বাজারে লাফিয়ে লাফিয়ে দাম বাড়ছে জ্বালানির। তাই দেশে আমদানি স্বাভাবিক রাখতে এবার বাধ্য হয়ে জ্বালানির দাম বাড়াল শেখ হাসিনা সরকার। যার ফলে বাংলাদেশে এক লাফে অনেকটাই বাড়ল পেট্রোপণ্যের দাম। পেট্রোল এবং ডিজেলের লিটার প্রতি দাম বেড়েছে প্রায় ৩০ থেকে ৪০ টাকা। শুক্রবার রাত ১২টার পর থেকে কার্যকর হয়েছে এই দাম। অক্টেন, কেরোসিনেরও দাম বেড়েছে।
বাংলাদেশে এক লিটার পেট্রলের দাম বেড়েছে ৪৪ টাকা। আগে ছিল ৮৬ টাকা। এখন তা বেড়ে হয়েছে ১৩০ টাকা। লিটার প্রতি ডিজেলের দাম বেড়েছে ৩৪ টাকা। আগে এক লিটার ডিজেলের দাম ছিল ৮০ টাকা। এখন তা বেড়ে হল ১২৪ টাকা। অক্টেনের দাম লিটার প্রতি বেড়েছে ৪৬ টাকা। আগে এক লিটার অক্টেনের দাম ছিল ৮৯ টাকা। এখন তা বেড়ে হল ১৩৫ টাকা। কেরোসিনের দাম লিটার প্রতি বেড়েছে ৩৪ টাকা। এই দাম বাড়ার কারণে মাথায় হাত সাধারণ মানুষের।
প্রসঙ্গত, জ্বালানির দামে ভর্তুকি তুলে দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। সে কারণেই আচমকা দাম বৃদ্ধি। দেশের বিদ্যুৎ, জ্বালানি এবং খনিজ সম্পদ মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, গত ছ’ মাসে পেট্রোপণ্য বিক্রিতে আট হাজার ১৪ কোটি টাকা লোকসান করেছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন (বিপিসি)। এর আগে বাংলাদেশে শেষ বার পেট্রোপণ্যের দাম বেড়েছিল ২০২১ সালের নভেম্বরে। তখন প্রতি লিটার পেট্রল এবং কেরোসিনের দাম বেড়েছিল ১৫ টাকা করে।
এদিকে, জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির পর শনিবার সকাল থেকেই ঢাকার রাস্তায় কমে গিয়েছে বাস। দীর্ঘ ক্ষণ দাঁড়িয়ে রয়েছেন, তবু বাস পাচ্ছেন না যাত্রীরা। তাঁদের অভিযোগ, নির্ধারিত ভাড়ার থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। যেমন শনিবার সকাল থেকে চট্টগ্রামে গণপরিবহণ চলাচল কমে গিয়েছে। আনুষ্ঠানিক কোনও পরিবহণ ধর্মঘটের ডাক না দিলেও বিভিন্ন স্থানে বাস চলাচলে বাধা সৃষ্টি করছে পরিবহণ কর্মীরা। ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।
পেট্রোপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির ফলে স্বাভাবিকভাবেই চাপে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির অর্থ, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি। ফলে আম আদমির পকেটে চাপও দ্বিগুণ হবে। উল্লেখ্য, এমনিতেই বিশ্বের অনেক দেশের মতো অতিমারির প্রভাব এখনও পুরোপুরি কাটিয়ে ওঠেনি বাংলাদেশের অর্থনীতি। তার উপর এই হারে পেট্রোপণ্যের দাম বৃদ্ধিতে যে সাধারণের মানুষের ভোগান্তি আরও বাড়বে, তা বলাই বাহুল্য।