একুশের ভোটে তৃণমূলের জয়ের পিছনে মমতার ক্যারিশ্মা ছাড়াও ছিল তাঁর অক্লান্ত পরিশ্রম। তিনিই দলের ভোটকুশলী হিসেবে এনেছিলেন প্রশান্ত কিশোরকে। তারপর গঙ্গা থেকে অনেক জল গড়িয়ে গিয়েছে। এখন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তিনি। অর্থাৎ দলের ঘোষিত ২ নম্বর। কথা হচ্ছে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। এই মুহূর্তে যাঁর হাতে দলের অনেক বিষয়ের রাশ রয়েছে বলে মানছেন তৃণমূলের প্রবীণ সাংসদেরাও। তাঁদের মতে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চলতি দিল্লী সফরেই তা প্রমাণিত হয়েছে।
দলীয় সূত্রের বক্তব্য, এবারে মমতার সফরটি কী ভাবে হবে না হবে, তা কলকাতায় বসে আগাম পরিচালনা করছিলেন অভিষেক। সেই অনুযায়ী তিনি ফোনে যোগাযোগ করে গিয়েছেন তৃণমূলের সংসদীয় নেতাদের সঙ্গে। দিল্লীতে মমতার পাশাপাশি সাংসদদের সঙ্গে আলাদা করে বৈঠকও করেছেন অভিষেক। বর্ষাকালীন অধিবেশন চলছে বলে তৃণমূলের ‘টিম’ এখন দিল্লীতে। পরে তৃণমূলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন বলেন, ‘দিদির সঙ্গে সব সাংসদেরা মন খুলে গল্প করেছেন। আর অভিষেকের সঙ্গে কাজের কথাবার্তা হয়েছে।’
প্রথমে ঠিক ছিল, দলের রাজ্যসভার মুখ্য আহ্বায়ক সুখেন্দুশেখর রায়ের মহাদেবরোড-এর বাড়িতে তৃণমূল নেত্রী সাংসদদের সঙ্গে চা চক্রে মিলিত হবেন। তার পর সাংবাদিক সম্মেলন হবে। তার পর নৈশাহার। সাংবাদিকদের সম্ভাব্য তালিকাও চেয়ে পাঠান অভিষেক। কিন্তু পরে তিনি জানিয়ে দেন, সাংবাদিক সম্মেলন বাতিল করতে হবে। এই মুহূর্তে নেত্রী সাংবাদিকদের মুখোমুখি হতে চাইছেন না। এর পর আবারও নির্দেশ পাঠান দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। তা হল, দীর্ঘক্ষণ সাংসদদের বৈঠকে থাকবেন না নেত্রী। ফলে নৈশাহারের বন্দোবস্ত বাতিল করতে হবে।
তাঁর কথা মতো ব্যবস্থা নেন তৃণমূল সাংসদেরা। এর পর একেবারে শেষ মুহূর্তে বলা হয়, বৈঠকের জন্য বড় মণ্ডপ না করে তা ছোট আকারের করতে। সূত্রের মতে, এই বৈঠক নিয়ে বাহ্যিক প্রচার বেশি হোক, এটা চাইছিলেন না দলনেত্রী মমতা। তবে শেষ মুহূর্তে মণ্ডপ ছোট করা অবশ্য সম্ভব হয়নি। বৃহস্পতিবার বিকেলের বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সব সাংসদের সঙ্গে ঘরোয়া ভাবে আলাপাচারিতা সেরে চলে যান। কিন্তু থেকে যান অভিষেক। তিনি ভিতরের ঘরে প্রবীণ সাংসদদের সঙ্গে বসে বৈঠক করেন। জানতে চান সংসদ এবং বর্তমান রাজনীতি নিয়ে সবার মতামত।