দেশে মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই বারবার কেন্দ্রের দুয়োরানিসুলভ আচরণের শিকার হয়েছে বাংলা। উঠেছে ক্রমাগত বঞ্চনার অভিযোগ। রাজ্যের প্রাপ্য বকেয়া অর্থ কেন্দ্র মেটাচ্ছে না বলে বহুবার অভিযোগ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার এ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে আবারও চিঠি লিখলেন তিনি। ঘটনাচক্রে, দিল্লীতে শুক্রবার বিকেলেই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছেন মমতা। প্রায় ৪৫ মিনিট তাঁদের মধ্যে বৈঠক হয়েছে। তবে বৈঠকে দু’জনের মধ্যে কী নিয়ে কথা হয়েছে, তা জানা না গেলেও প্রধানমন্ত্রীকে দেওয়া চিঠি মমতা জানিয়েছেন, কেন্দ্রের এক লক্ষ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে। তার মধ্যে ১০০ দিনের কাজ (মনরেগা), প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা এবং প্রধানমন্ত্রী গ্রামীণ সড়ক যোজনার ১৭,৯৯৬.৩২ কোটি টাকা বকেয়া। রাজ্য সরকারের তরফে কেন্দ্রকে এ বিষয়ে বার বার জানানো হলেও কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। বাংলার প্রাপ্য বকেয়া যাতে দ্রুত মিটিয়ে দেওয়া হয়, প্রধানমন্ত্রীর কাছে তার আর্জি জানান মমতা।
উক্ত চিঠিতে মমতা লিখেছেন, “মনরেগা, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা এবং প্রধানমন্ত্রী গ্রামীণ সড়ক যোজনার প্রকল্প রূপায়ণে গোটা দেশের মধ্যে একেবারে সামনের সারিতে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। তার পরেও কেন্দ্র থেকে টাকা আসছে না। যার জেরে প্রকল্প রূপায়ণ বাধা পাচ্ছে। সমস্যায় পড়ছেন গ্রামের মানুষেরা।” কেন্দ্রীয় প্রকল্পের জন্য সাধারণত অর্থবর্ষের শেষে টাকা পাঠানো হয়। যার জেরে সময় মতো প্রকল্প রূপায়ণ সম্ভব হয় না বলেও জানান মুখ্যমন্ত্রী। গত বছরের নভেম্বরে প্রধানমন্ত্রীর কাছে বকেয়া অর্থ মেটানোর আর্জি জানিয়েছিলেন মমতা। চিঠিতে তার উল্লেখ করে মুখ্যমন্ত্রী জানান, বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্প, করের ভাগ, চতুর্দশ অর্থ কমিশনের পারফরম্যান্স গ্রান্ট বাবদ কেন্দ্রের কাছে ১,০০,৯৬৮.৪৪ কোটি টাকা পায় রাজ্য। মোট বকেয়া অর্থের অঙ্ক জানানোর পাশাপাশি একটি হিসাবও তুলে ধরেন মমতা। মনরেগা, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা, প্রধানমন্ত্রী গ্রামীণ সড়ক যোজনা, সমগ্র শিক্ষা মিশন, মিড-ডে-মিল, স্বচ্ছ ভারত মিশন, বিশেষ বিআরজিএফ, খাদ্য ভর্তুকি-সহ ১৩টি প্রকল্পে বিপুল অর্থ বকেয়া রেখেছে কেন্দ্র। তার মোট অঙ্ক ৩৯,৩২২.৬০ কোটি টাকা। আম্ফানে প্রায় ৩২,৩১০, বুলবুলে ৬,৩৩৪ এবং ইয়াসে ৪,২২২ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে। এ ছাড়াও চতুর্দশ অর্থ কমিশনের পারফরম্যান্স গ্রান্ট বাবদ আরও প্রায় ১০১৬ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে কেন্দ্রের কাছে। চিঠিতে বিশদে এসবই জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।