হেরিটেজ তকমা বজায় রেখেই এবার শুরু নতুন পথ চলা। রক্সি সিনেমা হল সংস্কার করে সেখানে অফিস তৈরি করবে পুরসভা। রক্সি হলের সঙ্গে বাঙালির নস্ট্যালজিয়া জুড়ে রয়েছে। সিনেমা হল হিসাবে যাত্রা শুরু করার আগে এটি ছিল অপেরা হাউস। ‘হেরিটেজ’ হওয়ায় সিনেমা হলের বাইরে অবশ্য কোনও ধরনের কাজ করা হবে না। প্রয়োজনের জন্য কেবলমাত্র সিনেমা হলের ভিতরের অংশে পুরসভার অ্যাসেসমেন্ট ও মার্কেট বিভাগের অফিস তৈরি করা হবে। বৃহস্পতিবার পুরসভায় মেয়র পারিষদ বৈঠকে রক্সি সিনেমা হলকে কার্যকরী করে তোলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এতদিন পর্যন্ত হেরিটেজ হওয়ায় বিষয়টি নিয়ে জটিলতা ছিল। বিভিন্ন দিক খতিয়ে দেখার পরে হেরিটেজ তকমা অক্ষুণ্ণ রেখে সেটির ভিতরে পুরসভা অফিস তৈরি করার বিষয়ে সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত হয়েছে। ধর্মতলা চৌরঙ্গি প্লেসে রয়েছে ঐতিহ্যশালী রক্সি। সিনেমা হল হিসাবে যাত্রা শুরু করার আগে এটি ছিল অপেরা হাউস। ১৯৪০ সালে এটি সিনেমা হলে রূপান্তরিত হয়। ঐতিহ্য এই হলে সিনেমা দেখতে এসেছিলেন সুভাষচন্দ্র বসু। অশোককুমার অভিনীত ‘কিসমত’ সিনেমা দেখতে এসেছিলেন। এই হলে ১০৮ দিন এই সিনেমা চলেছিল।
উল্লেখ্য, রক্সি হলের সঙ্গে বাঙালির নস্ট্যালজিয়া জুড়ে রয়েছে। ঐতিহ্য এই ভবন পুরসভার সম্পত্তি। বেঙ্গল প্রপার্টিজ প্রাইভেট লিমিটেডকে সিনেমা হলটি লিজ দিয়েছিল পুরসভা। ৯৯ বছরের চুক্তিতে লিজ দেওয়া হয়েছিল। ২০০৭-২০০৮ সালে চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও তৎকালীন পুরবোর্ড রক্সি দখলমুক্ত করতে কোনও উদ্যোগ নেয়নি। তৃণমূল পুরবোর্ড ক্ষমতায় আসার পর বিষয়টি নজরে আসে এবং রক্সি দখলমুক্ত করতে উদ্যোগ নেয়। সেই সময় ওই সংস্থা পুরসভার সঙ্গে পুনরায় চুক্তি করতে চায়। কিন্তু পুরসভার দাবি মতো অর্থ না দিতে নারাজ ওই সংস্থা আদালতে মামলা করেছিল। ২০১৭ সালে ওই মামলার রায় পুরসভার পক্ষ থেকে রক্সি পুনরুদ্ধারের কাজ শুরু হয়। কিন্তু সেই সময় এক সংস্থার দাবি রক্সিতে তিনটি তল ভাড়া নিয়েছেন তিনি। ফের আটকে যায় রক্সির পুনরুদ্ধারের কাজ। ফিরহাদ হাকিম মেয়র পদে নিযুক্ত হওযার পরই রক্সি পুনরুদ্ধার করা হয়। সিনেমা হল ভেঙে সেখানে পুরসভার বিজ্ঞাপন দফতর, অ্যাসেসমেন্ট ও বাজার বিভাগের একটা অংশ সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। ইতিমধ্যে বিজ্ঞাপন দফতরে অফিস তৈরির কাজ প্রায় শেষের মুখে। চলতি মাসেই রক্সিতে সরছে বিজ্ঞাপন দফতর।