জোরকদমে আগামী মরসুমের জন্য প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে লাল হলুদ শিবির। বৃহস্পতিবার সকালে শহরে এসেছেন ইমামি ইস্টবেঙ্গলের কোচ স্টিভন কনস্ট্যান্টাইন। মাঝে মাত্র কয়েক ঘণ্টার বিশ্রাম। গতকাল দুপুরেই নেমে পড়লেন অনুশীলনে। প্রথম দিনই বুঝিয়ে দিলেন, দলের রাশ থাকবে তাঁর হাতেই। কলকাতা লিগ এবং ডুরান্ড কাপের জন্যে ইমামি ইস্টবেঙ্গলের কোচ ঠিক করা হয়েছে বিনো জর্জকে। তবে প্রথম দিনের অনুশীলনে দলের প্রধান ফুটবলারদের নিয়ে অনুশীলন করাতে দেখা গেল কনস্ট্যান্টাইনকেই। বিনো ব্যস্ত থাকলেন রিজার্ভ বেঞ্চের ফুটবলারদের নিয়ে। এদিন দুপুর তিনটে থেকে ইমামি ইস্টবেঙ্গলের অনুশীলন ঠিক হয়েছিল। ব্রিটিশ কোচ নেমে পড়লেন মিনিট পাঁচেক আগেই। ঘুরে দেখলেন ক্লাবের মাঠ। কাঁটায় কাঁটায় তিনটে থেকে শুরু হয়ে গেল অনুশীলন। মাঠের সেন্টার সার্কেলে ফুটবলারদের গোল করে দাঁড় করিয়ে পাসিং অনুশীলন করালেন তিনি। প্রথম দিনই ফুটবলাররা বুঝে গেলেন, কতটা কঠিন হতে চলেছে ব্রিটিশ কোচের অনুশাসন। পাসিং করতে কোনও ফুটবলারের ভুল হলে সঙ্গে সঙ্গে মিলছিল শাস্তি। কাউকে দৌড় করানো হল। কাউকে দিতে হল ডন বৈঠক। ভারতীয় দলের কোচ থাকাকালীন যে শৃঙ্খলা দলে ছিল, সেটা দেখা গেল লাল-হলুদেও।
উল্লেখ্য, অনুশীলনের শুরুতেই ফুটবলারদের দাঁড় করিয়ে বুঝিয়ে দিলেন, তিনি কী চান। শৌভিক চক্রবর্তী, ভিপি সুহের, সার্থক গোলুই, অমরজিৎ সিংহ কিয়ামদের মাথা নীচু করে মন দিয়ে সব শুনতে দেখা গেল। এর পর দ্বিতীয় সারির ফুটবলারদেরও নিজের লক্ষ্যের কথা বুঝিয়ে দিলেন। তবে প্রথম দিন বলেই বেশিক্ষণ অনুশীলন করালেন না। এক ঘণ্টার কাছাকাছি অনুশীলনের পর দাঁড়ি টানলেন। কনস্ট্যান্টাইনের অনুশীলন-পর্বে পুরো সময়টাই কাছাকাছি দেখা গেল না বিনোকে। তিনি গোলকিপারদের নিয়ে ব্যস্ত রইলেন। অনুশীলনের শেষে ক্লাব কর্তা দেবব্রত সরকারের সঙ্গে অনেকক্ষণ কথা বলতে দেখা গেল কনস্ট্যান্টাইনকে। পরে সাংবাদিকদের বললেন, “আমি এখানে হারতে আসিনি। সফল হতে এসেছি। ভারতের জাতীয় দলের হয়ে যে সাফল্য পেয়েছিলাম, এখানেও সেটাই করে দেখাতে চাই। এখানে তরুণদের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ রয়েছে। আশা করি কোনও না কোনও প্রতিভা উঠে আসবে অ্যাকাডেমি বা রিজার্ভ বেঞ্চ থেকে।” তাঁর সংযোজন, “সফল হতে গেলে সেই প্রক্রিয়া অনেক আগে থেকে শুরু করতে হয়। কঠোর পরিশ্রম দরকার, দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে হবে। বাকি দলগুলো অনুশীলন শুরু করে দিয়েছে। আমাদের সামনে যে সুযোগ রয়েছে, সেটা লুফে নিতে হবে। বলছি না যে প্রথম বারেই আমরা আইএসএল জিতব। তবে এটা বলতে পারি, ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে খেলা সহজ হবে না।” দেশীয় ফুটবলার থেকে বিদেশি নির্বাচন, পুরো ব্যাপারটাই ছেড়ে দেওয়া হয়েছে ব্রিটিশ কোচের উপর। তিনিই নতুন ফুটবলার নির্বাচন করবেন। আইএসএল খেলা বিদেশিদের তুলনায় নতুন বিদেশি আনার দিকেই বেশি নজর দেওয়া হবে। এমনই জানিয়েছেন দেবব্রত সরকার। নতুন সাপোর্ট স্টাফরাও আসবে। দেবব্রতের আশা, আগামী সপ্তাহের মধ্যে গোটা চূড়ান্ত হবে পুরো বিষয়টি।
