একজন পুরসভার কর্মী হয়েও বিপুল পরিমাণ সম্পত্তির মালিক তিনি। এবং তা একেবারেই আয় বহির্ভূত। যার ফলে আগেই গ্রেফতার করা হয়েছিল শুভেন্দু অধিকারীর পরিবারের ঘনিষ্ঠ কাঁথি পুরসভার সহকারী ইঞ্জিনিয়ার দিলীপ বেরা। তাঁর কোটি কোটি টাকার সম্পতির সঙ্গে সারদা কেলেঙ্কারির যোগ রয়েছে বলেই মনে করে পুলিশ। তদন্তের সুবিধার্থে ইতিমধ্যেই তাঁর ব্যাঙ্কের লকার তল্লাশির অনুমোদন পেয়েছে কাঁথি থানার পুলিশ। মঙ্গলবার তমলুকের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা আদালতের (১ম) বিচারক এই নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন সরকার পক্ষের আইনজীবী বদ্রু আলম মল্লিক।
পুলিশ সূত্রে খবর, বর্তমানে পুলিশ হেফাজতে থাকা কাঁথি পুরসভার সহকারী ইঞ্জিনিয়ার দিলীপ বেরার সম্পত্তির পরিমাণ ৩ কোটি ৮৯ লক্ষ ৫২ হাজার ৯৪৭ টাকা। জানা গিয়েছে, ২০০০ সালের আগে দিলীপ বেরা কাঁথি পুরসভার কাজে যোগ দেন। তখন অধিকারী পরিবারের সদস্যরা পুরপ্রধানের দায়িত্ব সামলেছেন। ৩০ এপ্রিল ২০২২ সাল পর্যন্ত বেতন বাবদ অ্যাকাউন্টে ঢুকেছে ৮৯ লক্ষ ৯৫ হাজার ৮৬৯ টাকা। তার পরেও কী করে নিজের ও স্ত্রীর নামে বিপুল সম্পত্তি এল তা তদন্ত করে দেখছে কাঁথি থানার পুলিশ ও জেলা পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্তাব্যক্তিরা।
প্রসঙ্গত, তদন্তে নেমে অধিকারীদের ঘনিষ্ঠ এই ইঞ্জিনিয়ারের সম্পত্তি দেখে চক্ষু চড়কগাছ আধিকারিকদের। বিমা, ফিক্সড ডিপোজিট ওই ইঞ্জিনিয়ারের স্ত্রীর নামে প্রায় দু’কোটি টাকা রয়েছে। ১ কোটি ৩০ লক্ষ টাকা দিয়ে জমি কিনেছেন। গাড়ি, সোনা কিনে ব্যয় করেছেন আরও ৮ লক্ষ টাকা। শুধুমাত্র কাঁথি সেন্ট্রাল বাসস্ট্যান্ড জনমঙ্গল সমিতিতে রয়েছে ১ কোটি ২৭ লক্ষ ১৩ হাজার ৭১৭ টাকা। স্ত্রীর নামে একটি বেসরকারি ব্যাংকের ফিক্সড ডিপোজিট পরিমাণ ১৭ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা। এছাড়াও একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের নিজের ফিক্সড ডিপোজিট রয়েছে ১৫ লক্ষ টাকা।
খুব স্বাভাবিক ভাবেই সাধারণ এক পুরসভার কর্মীর অ্যাকাউন্টে কীভাবে এত টাকা এল তা খতিয়ে দেখতে চান পুলিশ আধিকারিকরা। এদিন তাই ১২ দিনের পুলিশ হেফাজতের পর তমলুক আদালতে ধৃতকে তোলা হলে বিচারক তার জামিন নাকচ করে দিয়ে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন সরকার পক্ষের আইনজীবী বদ্রু আলম মল্লিক। জানা গিয়েছে, তমলুকের বিশেষ আদালতের বিচারক স্মিতা গৌরীসারিয়া অভিযুক্তের জামিন নাকচ করে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। পাশাপাশি, পুলিশ অভিযুক্তের ব্যাঙ্কের লকার তল্লাশি করতে পারবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।