নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতায় আসার পর থেকেই ক্রমাগত কেন্দ্রীয় বঞ্চনার শিকার হয়েছে বাংলা। চলতি অর্থবছরে ১০০ দিনের কাজের টাকাও পায়নি এ রাজ্য। তবুও হেলদোল নেই মোদী সরকারের। এবার বিপন্ন গ্রামীণ অর্থনীতির জন্যে এগিয়ে এল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। গ্রাম-বাংলার অদক্ষ শ্রমিকদের জন্যে বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করছে রাজ্য। ১০০ দিনের কাজের জবকার্ড হোল্ডারদের বিকল্প কর্মসংস্থান সুনিশ্চিত করতে, দু’মাসে আগেই প্রতিটি দফতরকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। সেখানেই সাফল্যের অনন্য নজির স্থাপন করল বাংলা। বাংলার জবকার্ড হোল্ডারদের বিকল্প কর্মসংস্থানের জোগান অব্যাহত রাখতে, ইতিমধ্যেই ৫০০ কোটি টাকার মজুরি নিশ্চিত করা হল। গ্রামের প্রান্তিক মানুষ যারা একশো দিনের কাজের উপর নির্ভরশীল, তাদের জন্যে আরও বিকল্প কাজ ও কর্মদিবসের সংখ্যা বাড়াতে চায় রাজ্য সরকার। রাজ্যের তরফে একাধিক উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। সম্প্রতি পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের আধিকারিকরা এই মর্মে বৈঠকও করেন।
উক্ত বৈঠকে জেলায় জেলায় জবকার্ড হোল্ডার আরও বেশি করে কাজের ব্যবস্থা করতে, জেলা আধিকারিকদের বিশেষ নজর দিতে বলা হয়েছে। উত্তর দিনাজপুর, হাওড়া, বাঁকুড়া, কোচবিহার ও ঝাড়গ্রাম ইত্যাদি জেলাকে উদ্যোগ নিতে বলা হয়েছে। বাংলার প্রায় ৪০টি দফতরে, নানান কাজে ১০০ দিনের কাজের জবকার্ড হোল্ডারদের নিয়োগ করা হচ্ছে। প্রায় ২.৩২ লক্ষ জবকার্ড হোল্ডার এখনও পর্যন্ত কাজ পেয়েছে। গত দুমাসে বাংলায় প্রায় ২.৬৬ কোটি কর্মদিবস সৃষ্টি হয়েছে। কর্মদিবস সৃষ্টির নিরিখে এগিয়ে রয়েছে মালদা ও দুই ২৪ পরগনা। কলকাতা ব্যতীত বাংলার বাকি ২২টি জেলাতেই বিকল্প কাজ দেওয়া হচ্ছে। এখনও পর্যন্ত মজুরি বাবদ প্রায় ৪৯৪.৩২ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যেই যা ৫০০-এর গণ্ডি ছুঁয়ে ফেলতে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে। উল্লেখ্য, জবকার্ড হোল্ডারদের সর্বাধিক কর্মসংস্থান জুগিয়েছে বাংলার পঞ্চায়েত দফতর। রাজ্য পঞ্চায়েত দফতর ১৯.৫৯ লক্ষ মানুষকে বিকল্প কাজ দিয়েছে। স্কুলশিক্ষা দফতর ও সেচ দফতর যথাক্রমে, ৮১,২০৯ জন ও ৫০,১২৯ জনকে বিকল্প কাজে নিযুক্ত করেছে। উত্তর বাংলার জেলাগুলিতে ২৯,৪০৬ জন জবকার্ড হোল্ডারকে কাজ দিয়েছে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর।