শিক্ষাক্ষেত্রে দুর্নীতির অভিযোগ উঠল খোদ প্রধানমন্ত্রীর রাজ্যেই! গুজরাটের ছয় পড়ুয়া মার্কিন মুলুকে পড়াশোনা করার জন্য বাধ্যতামূলক ইংরেজি পরীক্ষায় ভাল নম্বর পেয়ে পাশ করেছিলেন। কিন্তু আমেরিকার আদালতের সামনে ইংরেজি বলতে গিয়ে কালঘাম ছুটে গেল তাঁদের। এহেন ঘটনার পরে তদন্ত শুরু করে সেরাজ্যের পুলিশ। জানা গিয়েছে, ইংরেজি পরীক্ষা নেওয়ার সময়ে বড়সড় দুর্নীতি হয়েছে। এই ঘটনার সঙ্গে কোনও একটি চক্র জড়িত রয়েছে বলেও জানিয়েছে গুজরাট পুলিশ। উল্লেখ্য, বেশ কয়েকটি দেশের নামী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করতে গেলে বাধ্যতামূলকভাবে ইংরাজি পরীক্ষায় বসতে হয়। ইন্টারন্যাশনাল ইংলিশ ল্যাঙ্গুয়েজ টেস্টিং সিস্টেম (আইইএলটিএস) নামের ওই পরীক্ষায় পাশ না করলে স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়া যায় না। অনেক সময়েই মেধাবী পড়ুয়ারাও এই পরীক্ষায় পাশ করতে না পেরে বিদেশে পড়তে যেতে পারেন না। অন্যদিকে সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত ছয় গুজরাটি পড়ুয়া সাড়ে ছয় থেকে সাত স্কোর করেছেন। এই নম্বরকে যথেষ্ট ভাল বলেই মনে করা হয়। কিন্তু আদালতে গিয়ে একবর্ণও ইংরেজি বলতে পারলেন না তাঁরা!
প্রসঙ্গত, গত মার্চ মাসে কানাডা সীমান্তের লাগোয়া একটি নৌকাডুবি থেকে ওই ছয় পড়ুয়াকে উদ্ধার করা হয়েছিল। অবৈধভাবে সেদেশে ঢোকার চেষ্টা করছিল পড়ুয়ারা, সেই অভিযোগে তাদের আদালতে তোলা হয়। সেখানেই হতবাক হয়ে যান বিচারকরা। ইংরেজিতে প্রশ্ন করা হলেও একবর্ণ বুঝতে পারছিল না অভিযুক্ত পড়ুয়ারা। শেষ পর্যন্ত হিন্দি অনুবাদকের সাহায্যে শুনানি শুরু করা হয়। কিন্তু এই ঘটনার পরেই গুজরাট পুলিশের কাছে অভিযোগ জানায় মার্কিন সরকার। সেই মতো তদন্ত শুরু করে মেহসানা জেলার পুলিশ। প্রকাশ্যে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। তদন্তকারী অফিসার ভবেশ রাঠোর জানিয়েছেন, “যে কেন্দ্রে আইইএলটিএসের টেস্ট হয়েছিল, সেখানকার সমস্ত সিসিটিভি ক্যামেরা বন্ধ করে পরীক্ষা নেওয়া হয়েছিল। তাতেই বোঝা যাচ্ছে, গোটা পরীক্ষা পদ্ধতিতেই কারচুপি করা হয়েছিল। আহমেদাবাদের একটি সংস্থা পরীক্ষা নেওয়ার দায়িত্বে ছিল। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তাদের হাজিরা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।” এমন ঘটনার কথা জনসমক্ষে আসার পরে সরব হয়েছে নেটাগরিকরা। তাঁদের মতে, এইভাবে দুর্নীতি করে হয়তো কিছু পড়ুয়া বিদেশের নামকরা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে পড়তে পারবে। কিন্তু দুর্নীতির কথা প্রকাশ্যে আসার ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে ভারতের সকল পড়ুয়া। অভিযুক্ত পড়ুয়াদের বয়স ১৯ থেকে ২১-এর মধ্যে। তার মধ্যে চারজন মেহসানা জেলার বাসিন্দা। স্বাভাবিকভাবেই এই ঘটনার পর চরম সমালোচনা মুখে গুজরাটের বিজেপিশাসিত সরকার।