রাজ্য রাজনীতিতে শুরু হয়েছে তোলপাড়। অতিসম্প্রতি ৪৯ লক্ষ টাকা সমেত ঝাড়খণ্ডের তিন কংগ্রেস বিধায়ককে গ্রেফতার করে এ রাজ্যের সিআইডি। তবে কে তাঁদের এই টাকা দিয়েছিলেন, সেই খোঁজ এখনও মেলেনি। তবে তদন্তকারীরা দাবি করেছেন, যে ব্যক্তির বিরুদ্ধে এই বিধায়কদের টাকা দেওয়ার অভিযোগ, তাঁর খোঁজে তল্লাশি চলছে। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন যে ঝাড়খণ্ডের তিন বিধায়ক কলকাতার এক হোটেলে ৫০ মিনিট ছিলেন। সেখানেই এই টাকার হাতবদল হয়েছে বলে অনুমান করছেন সিআইডি তদন্তকারীরা। জানা গিয়েছে, সদর স্ট্রিটের একটি হোটেলের ১০৬ নম্বর ঘরে ছিলেন সেই তিন কংগ্রেস বিধায়ক। হোটেল কর্মীরা নাকি তদন্তকারীদের জানান, যে হোটেল মালিক তাঁদেরকে এই তিন নেতার আসার কথা জানিয়েছিলেন। নেতারা যাতে বাথরুম ব্যবহার করতে পারেন, তার জন্য একটি ঘর খুলে দেওয়ার জন্য বলা হয়েছিল। হোটেল ঘরে সেই বিধায়করা ৩টে ৪ মিনিট থেকে ৩টে ১০ মিনিট পর্যন্ত ছিলেন। এরপর ৩টে ১০ থেকে ৩টে ৫০ মিনিট পর্যন্ত তাঁরা সেই হোটেলের বার কাম রেস্তোরাঁয় বসেছিলেন। পুলিশ জানিয়েছে, যখন বিধায়করা বারে বসেছিলেন, তখন এক ব্যক্তি স্কুটারে করে হোটেল ছাড়েন। কিছুক্ষণ পরে সেই ব্যক্তি বড় একটি ব্যাগ নিয়ে ফের হোটেলে আসেন। মনে করা হচ্ছে, এই ব্যাগে করেই টাকা আনা হয়েছিল। পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখছে সিআইডি।
উল্লেখ্য, জিজ্ঞাসাবাদের পর বিধায়করা জানিয়েছিলেন যে তাঁরা বড়বাজারে আদিবাসীদের জন্য শাড়ি কিনতে এসেছিলেন। এদিকে বিধায়করা শাড়ি কিনতে আসার কথা দাবি করলেও এত নগদ তাঁদের গাড়িতে কী করছিল এর সদুত্তর মেলেনি। কারণ গাড়ি যখন আটক হয়েছিল তখন সেটি কলকাতা থেকে বেরিয়ে যাচ্ছিল। এদিকে গাড়ি থেকে কোনও শাড়ি উদ্ধার হয়েছে কি না, তা জানা যায়নি। এদিকে পাঁচলায় টাকা উদ্ধার কাণ্ডে তদন্তে সিআইডি দাবি করছে, ঝাড়খণ্ড সরকার ফেলার উদ্দেশেই ৩ কংগ্রেস বিধায়ককে টাকা দেওয়া হয়েছিল। সিআইডির দাবি তদন্তে উঠে এসেছে, গত মাসের শেষের দিকে ঝাড়খণ্ডে সরকার ফেলার জন্য তৎপর হন ২ কংগ্রেস বিধায়ক। গত ২০শে জুন গুয়াহাটি গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার সঙ্গে দেখা করেন ২ বিধায়ক রাজেশ কচ্ছপ, ইরফান আনসারি। এর পর রাঁচি ফিরে যান তাঁরা। গত শনিবার ফের গুয়াহাটি যান তাঁরা। সঙ্গে ছিলেন আরও এক বিধায়ক। এক মধ্যস্থতাকারীর মাধ্যমে ফের বৈঠক হয় হিমন্ত বিশ্বশর্মার সঙ্গে। বৈঠকে তারা জানান, একাধিক কংগ্রেসী ও জেএমএম বিধায়ক তাঁদের সঙ্গে রয়েছেন। কিন্তু দল ভাঙাতে কিছু টাকার প্রয়োজন। তখন মধ্যস্থতাকারী জানান, টাকা পাওয়া যাবে কলকাতায়। সেই মতো তিন বিধায়ক কলকাতায় চলে আসেন। স্বাভাবিকভাবেই এই ঘটনা নিয়ে রাজনীতির আঙিনায় তুমুল শোরগোল শুরু হয়েছে। বিতর্কে বিজেপিও।