হাওড়ায় ঝাড়খণ্ডের কংগ্রেস বিধায়কদের গাড়ি থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা উদ্ধার হওয়ার পর থেকেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে। মহারাষ্ট্রের মতো ঝাড়খন্ডেও ঘোড়া কেনাবেচার অভিযোগ উঠছে বিজেপির বিরুদ্ধে। এবার এই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি জানাল তৃণমূল। এদিন তৃণমূলের তরফে সাংবাদিক বৈঠক করে দাবি করা হয়, এই টাকা উদ্ধার কান্ডে এ রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী সরাসরি যুক্ত রয়েছেন। সেই সঙ্গে এই টাকার উৎস কোথায়, কংগ্রেস বিধায়করা শেষ কার সঙ্গে দেখা করেন, কোথা থেকে কোথায় যাচ্ছে— তা নিয়ে কংগ্রেসের কাছে জবাবদিহিও চাওয়া হয়েছে।
সাংবাদিক সম্মেলনে তৃণমূলের তরফে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা, রাজ্য তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ এবং রাজ্য তৃণমূলের সহসভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার। তৃণমূলের অভিযোগ, এই টাকা ঝাড়খণ্ড সরকার ফেলার ষড়যন্ত্রে ব্যবহার করা হচ্ছিল। সেই প্রসঙ্গে তৃণমূল, বিজেপিকে কাঠগড়ায় তুলেছে। তাদের অভিযোগ, জনতার রায়ে বিজেপি যেখানে সরকার গড়তে পারছে না, সেখানে ব্যাক ডোর পলিটিক্স করে সরকার গড়ছে বিজেপি। অর্থবল, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার ভয় ইত্যাদিকে হাতিয়ার করে বিরোধী দলের সরকার ফেলছে বিজেপি বলেও কটাক্ষ করে তৃণমূল।
তাদের আরও অভিযোগ, বিজেপি নেতারা কিছু দিন যাবৎ বলছিলেন মহারাষ্ট্রের পর এবার ঝাড়খণ্ড। এইভাবেই বিভিন্ন রাজ্যের বিরোধী দলগুলোর সরকার ফেলার হুঁশিয়ারি দিচ্ছিলেন বিজেপি নেতারা। শুভেন্দু অধিকারীও এমন ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করেছিলেন, মহারাষ্ট্রের পর ঝাড়খণ্ডে বিজেপি সরকার তৈরি হবে। তার কয়েকদিনের মধ্যেই এমন ঘটনা ঘটায়, এই টাকা উদ্ধার বড় ষড়যন্ত্র বলছে তৃণমূল। রাজ্যের শাসক দলের দাবি, যেভাবে মহারাষ্ট্রে সরকার ফেলা হয়েছে, সেইভাবেই বিজেপি ঝাড়খণ্ডেও সরকার ফেলার চক্রান্ত করছে, আর এই চক্রান্তে লিপ্ত রয়েছেন এ রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
এই টাকার উৎস তথা যাবতীয় চাক্রান্তের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ শুভেন্দু, এমনই অভিযোগ তৃণমূলের। কারণ শুভেন্দুই বারবার বলে এসেছেন মহারাষ্ট্রের পর এবার ঝাড়খণ্ড। সেই সঙ্গে বিজেপির রাজ্য সভাপতির বক্তব্যকেও হাতিয়ার করছে জোড়াফুল শিবির। বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার প্রকাশ্যে বলেছিলেন, শুভেন্দু অধিকারী একটি অপারেশনে গিয়েছে। ৭২ ঘন্টা পর বুঝবেন কী হচ্ছে। সেই বক্তব্যকে হাতিয়ার করে তৃণমূলের প্রশ্ন, এটাই কি সেই অপারেশন? মহারাষ্ট্রের ক্ষেত্রেও আসাম যোগ ছিল, কংগ্রেসের বিধায়কেরাও প্রাথমিকভাবে গোয়াহাটির কথা বলছেন। তবে কি একইভাবে হেমন্ত সোরেনের সরকার ফেলার অঙ্ক কষা হচ্ছিল? প্রশ্ন তৃণমূলের।