সোমবার দুপুরেই নবান্নের সাংবাদিক বৈঠক থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দিয়েছেন, আগামী বুধবার মন্ত্রিসভায় ছোটখাটো রদবদল করতে চলেছেন তিনি। আর সেই রদবদলের ফলে বর্তমান মন্ত্রিসভা থেকে চার পাঁচ জন মন্ত্রী বাদ পড়তে পারেন। পরিবর্তে আসবেন নতুন পাঁচ থেকে ছয় জন।
ফলে এখন থেকেই এই জল্পনা শুরু হয়ে গিয়েছে যে মন্ত্রিসভা থেকে কারা বাদ পড়তে পারেন। আর কাদেরই বা ভাগ্যে শিঁকে ছিড়তে চলেছে?
সূত্রের খবর, বর্তমান মন্ত্রিসভা থেকে বাদ পড়তে পারেন সৌমেন মহাপাত্র। তিনি এখন সেচ মন্ত্রী। তাঁকে পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুক সাংগঠনিক জেলার সভাপতি করা হয়েছে। তৃণমূলের একটি সূত্রের মতে, সেই কারণেই মন্ত্রিসভা থেকে বাদ পড়তে পারেন সৌমেন। কারণ, জেলা স্তরে অন্তত এক ব্যক্তি এক পদ সূত্রের বাস্তবায়ন শুরু করে দিয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এছাড়া মন্ত্রিসভা থেকে বাদ পড়তে পারেন শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারী।
প্রসঙ্গত, একুশের বিধানসভা ভোটের পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে মন্ত্রিসভা গঠন করেছিলেন, তাতে এখন তিনটি শূন্য পদ রয়েছে। সুব্রত মুখোপাধ্যায় ও সাধন পান্ডে মারা গিয়েছেন। আর গ্রেফতারির পরই পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে মন্ত্রিত্ব থেকে সরিয়ে দিয়েছেন মমতা। এদিকে তিনি এদিন জানিয়েছেন, বর্তমান ক্যাবিনেট থেকে চার-পাঁচ জন বাদ যাবেন। যার অর্থ হল, নতুন সাত থেকে আট জনকে মন্ত্রিসভায় আনা হবে।
শোনা যাচ্ছে, হুগলি জেলার সদ্য প্রাক্তন সভাপতি স্নেহাশিস চক্রবর্তীকে মন্ত্রী করা হতে পারে। স্নেহাশিসের ভাবমূর্তি পরিচ্ছন্ন। তা ছাড়া এলাকায় জনপ্রিয়তাও রয়েছে তাঁর। পাশাপাশি মন্ত্রী করা হতে পারে বাবুল সুপ্রিয়কে। আসানসোলের বিজেপি সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে বালিগঞ্জ বিধানসভা আসন থেকে জয়ী হয়েছেন তিনি। সেই বাবুলকেই এবার পূর্ণ মন্ত্রী বা স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী করা হতে পারে।
অন্যদিকে, পরেশ অধিকারী যদি সত্যিই মন্ত্রিসভা থেকে বাদ পড়েন তা হলে কপাল খুলতে পারে উদয়ন গুহর। এবার বিধানসভা ভোটে কোচবিহারের দিনহাটা আসনে বিজেপির নিশীথ প্ররামাণিকের কাছে ৫৭ ভোটে পরাস্ত হয়েছিলেন। পরে নিশীথ বিধানসভা থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর ওই আসনেই উপ নির্বাচনে দেড় লক্ষ ভোটের ব্যবধানে জিতেছেন উদয়ন। তাঁকে এ বার জেলার সাংগঠনিক দায়িত্বেও রাখা হয়নি। ফলে উদয়নকে মন্ত্রী করা হতে বলে মনে করা হচ্ছে।
মন্ত্রিসভার আসন্ন রদবদলে মন্ত্রী করা হতে পারে বরাহনগরের বিধায়ক তথা বিধানসভার উপ মুখ্য সচেতক তাপস রায়কেও। একুশের ভোটের পর তাঁকে প্রথমে উত্তর কলকাতা সাংগঠনিক জেলার সভাপতি করা হলেও পরে তাঁকে সরিয়ে ফের সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে সেই দায়িত্ব দেন মমতা। সোমবার জেলা স্তরে যে রদবদল হয়েছে, তাতেও সুদীপকে ওই পদে রাখা হয়েছে। ফলে তাপস রায়ের মন্ত্রিসভায় আসার সম্ভাবনা প্রবল বলেই মনে করা হচ্ছে।